সত্যিকার অর্থে অসুর কে ⁉️


=[]অসুর[]=

🙏 নমস্কার 🙏

➡️বর্তমান সময়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং চলচ্চিত্রের কারণে আমাদের সকলের নিকট অসুর নামক এক ভয়ানক বিশালদেহী, অতিপ্রাকৃত এক ধারণা জন্ম নিয়েছে। ফলস্বরূপ, অনেক এর মনে সংশয় উদয় হয় যে সত্যি কি এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর অস্তিত্ব সম্ভব। কিছু লোক পাশ্চাত্য জগৎ সৃষ্ট হলিউড মুভির সে কাল্পনিক চিত্র বা মাইথোলজিক্যাল স্কিপচারে হিসেবে অসুরকে উপস্থাপন করতে ব্যস্ত। 

কিন্তু সত্যিকার অর্থে অসুর কে ⁉️

অসুর কোন ভিন্ন জাতিবিশেষ নয় , বরং মানুষেরই অবস্থা-বিশেষ। শ্রীমদ্ভগবদগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অসুর সম্পর্কে বলেছেন, 

“প্রবৃতিঞ্চ নিবৃতিঞ্চ জনা ন বিদুরাসুরাঃ । 

ন শৌচং নাপি চাচারো ন সত্যং তেষু বিদ্যতে॥ 

=[]গীতা ১৬।৭[]=

অর্থাৎ, অসুর তারাই যারা প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তি জানে না , যাদের বাহ্যাভ্যন্তর শুদ্ধি নেই , সদাচার নেই এবং সত্যভাষণও নেই। 

উপরোক্ত শ্লোক থেকে উপলব্ধি হয় যে অসুর শব্দ প্রয়োগ সাধারণত সে সকল ব্যক্তির প্রতি প্রযোজ্য হয় যে প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তি জানে না বা বাহ্যাভ্যন্তর শুদ্ধি নেই , সদাচার নেই এবং সত্যভাষণও নেই। 

অসুর সম্পর্কে জানতে আমাদের প্রয়োজন পবিত্র বেদ এর মন্ত্র বিশ্লেষণ। কারণ পবিত্র বেদ এর বহু মন্ত্রে অসুর শব্দের উল্লেখ রয়েছে। যজুর্বেদ এর ২য় অধ্যায়ের ৩০তম মন্ত্রে বলা হয়েছে, 

"য়ে রূ॒পাণি॑ প্রতিমু॒ঞ্চমা॑না॒ऽঅসু॑রাঃ॒ সন্তঃ॑ স্ব॒ধয়া॒ চর॑ন্তি ।

প॒রা॒পুরো॑ নি॒পুরো॒ য়ে ভর॑ন্ত্য॒গ্নিষ্টাঁল্লো॒কাৎ প্র ণু॑দাত্য॒স্মাৎ"॥ 

=[]যজুর্বেদ ২.৩০[]=

পদার্থঃ- (য়ে) যে দুষ্ট মনুষ্য (রূপাণি) জ্ঞানের অনুকূল স্বীয় অন্তঃকরণে মথিত ভাবগুলিকে (প্রতিমুঞ্চমানাঃ) অন্যের সম্মুখে লুকিয়ে বিপরীত ভাবগুলির প্রকাশকারী (অসুরাঃ) ধর্মকে আচ্ছাদিত (সন্তঃ) করে (স্বধয়া) পৃথিবীতে যত্র-তত্র (চরন্তি) যাওয়া আসা করে এবং যে (পরাপুরঃ) সংসারের বিপরীত নিজের সুখকারী কর্মকে নিত্য সিদ্ধ করবার জন্য প্রযত্ন করে থাকে (নিপুরঃ) এবং দুষ্ট স্বভাবগুলিকে পরিপূর্ণ করে (সন্তঃ) থাকে অর্থাৎ যে অন্যায়পূর্বক অপরের পদার্থ ধারণ করে (তান্) সেই দুষ্টদের (অগ্নিঃ) জগদীশ্বর (অস্মাৎ) এই প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ লোক হতে (প্রণুদাতি) দূরীভূত করেন ॥ ৩০ ॥

ভাবার্থঃ- যেসব দুষ্ট মনুষ্য স্বীয় মন , বচন ও শরীর দ্বারা মিথ্যা আচরণ করে অন্যায়পূর্বক অন্য প্রাণিদের পীড়া দিয়ে স্বসুখের জন্য অপরের পদার্থ গ্রহণ করে নেয় । ঈশ্বর তাদেরকে দুঃখযুক্ত করে এবং নীচ যোনিতে জন্মদান করে । তারা স্বীয় পাপের ফল ভোগ করে পুনরায় মনুষ্য দেহ ধারণ করবার যোগ্য হয় । অতএব , সব মনুষ্যদের কর্ত্তব্য যে , এমন দুষ্ট মনুষ্য বা পাপ হতে মুক্ত থেকে সর্বদা ধর্মেরই সেবন করবে ॥ ৩০ ॥

অর্থাৎ, অসুর বলতে কোনো কাল্পনিক তত্ত্ব বা ব্যক্তিকে নয় বরং মনুষ্যের মাঝে যে সকল মনুষ্য স্বীয় মন , বচন ও শরীর দ্বারা মিথ্যা আচরণ করে অন্যায়পূর্বক অন্য প্রাণিদের পীড়া দিয়ে স্বসুখের জন্য অপরের পদার্থ গ্রহণ করে নেয় তাদের অসুর বলা হয়েছে। 

এছাড়াও অসুর শব্দের ভিন্ন প্রয়োগ রয়েছে বিভিন্ন সংহিতায়। যেমন: মহর্ষি যাস্ক তার নিঘণ্টু ও নিরুক্ত  ৩.৮ এ বলেছেন যে , অস্ ধাতু থেকে অসুর শব্দটি নিষ্পন্ন হয়েছে , যাস্কের মতে অসু শব্দ অর্থ শ্বাসবায়ু । আবার চরক সংহিতায় শারীরস্থানের ৪র্থ অধ‍্যায়ের ৩৭তম শ্লোকে ৬ প্রকারের রাজসিক ব‍্যক্তিত্বের বর্ণনা দেয়া হয়েছে ; যার মধ্যে অসুর ও রয়েছে ।

ও৩ম্ শান্তি শান্তি শান্তি 

VEDA

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন