ধৃতিঃ ক্ষমা দমোऽস্তেয়ং শৌচমিন্দিয্রনিগ্ৰহঃ।ধীর্বিদ্যাসত্যমক্রোধো দশকং ধর্ম লক্ষণম্।।
(মনুসংহিতা ৬/৯২)
ধৃতি, ক্ষমা, দম, অস্তেয়, শৌচ, ইন্দ্রিয়নিগ্রহ, ধী, বিদ্যা, সত্য, অক্রোধ- এই দশটি ধর্ম্মের লক্ষণ।
১। ধৃতি- সর্বদা ধৈর্য অবলম্বন করা;(ধারণা করা স্মরণ রাখিবার শক্তি।)
২। ক্ষমা- নিন্দা-স্তুতি, মান-অপমান এবং হানি-লাভাদি দুঃখের মধ্যেও সহিষ্ণু থাকা;(কেহ অপকার করিলে যে তাহার প্রত্যপকারে প্রবৃত্তি হয়,সেই প্রবৃত্তিকে যে শক্তি দ্বারা নিরোধ করা যায়।)
৩। দম- মনকে সর্বদা ধর্মে রত এবং অধর্ম হইতে বিরত রাখা;(শোক,তাপাদি দ্বারা কোন প্রকার চিত্তবিকৃতি উপস্থিতি হইলে,যে শক্তি দ্বারা ঐ প্রবৃত্তির নিরোধ করা যায়।)
৪। অস্তেয়- চৌর্য পরিত্যাগ করা অর্থাৎ অনুমতি ব্যতীত ছল, কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা বা বেদবিরুদ্ধ উপদেশ দ্বারা পরপদার্থ গ্রহণ না করা;(অবিধি পূর্ব্বক পরস্ব গ্রহণের প্রবৃত্তিকে যে শক্তি দ্বারা নিরূদ্ধ করা যায়।)
৫। শৌচ- রাগ, দ্বেষ ও পক্ষপাত পরিত্যাগ করিয়া জল, মৃত্তিকা মার্জনাদি দ্বারা শরীর ও মনের পবিত্রতা রক্ষা করা;(শরীর ও চিত্তের নির্ম্মলভাব।)
৬। ইন্দ্রিয়নিগ্রহ- ইন্দ্রিয়সমূহকে অধর্মাচরণ হইতে নিবৃত্ত করিয়া সর্বদা ধর্মপথে পরিচালনা করা;(যে শক্তি দ্বারা ইন্দ্রিয়গণকে বিষয় হইতে নিরুদ্ধ করা যায়।)
৭। ধী- মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য বুদ্ধিনাশক পদার্থ, কুসংসর্গ, আলস্য এবং প্রমাদ প্রভৃতি পরিত্যাগ করিয়া উৎকৃষ্ট পদার্থ সেবন এবং সৎসঙ্গ ও যোগাভ্যাস দ্বারা বুদ্ধির উন্নতি সাধন;(শাস্ত্রাদি দ্বারা বস্তুর তত্ত্ব নিশ্চয় শক্তি-ধীশক্তি)।
৮। বিদ্যা- পৃথিবী হইতে পরমেশ্বর পর্যন্ত(যাবতীয় পদার্থের) যথার্থ জ্ঞান অর্জন ও পদার্থসমূহের দ্বারা যথোচিত প্রয়োজনের সিদ্ধি এবং মন, বাক্য ও কর্ম দ্বারা আত্মানুরূপ আচরণ করা;(যে শক্তি দ্বারা অন্তরস্থ চৈতন্য স্বরূপ পরমাত্মার আন্তরিক প্রত্যক্ষ করা যায়,শরীরাদি হইতে আপনাকে পৃথকরূপে জানা যায়, যে শক্তি দ্বারা ইন্দ্রিয়,মন,বুদ্ধি অভিমান প্রভৃতি অন্তরস্থ পদার্থ সকল আম্র ও কাঁঠালের রসাস্বাদের ন্যায় পৃথক্ পৃথক্ রূপে জাজ্জল্যমান মানসিক প্রত্যক্ষ করিতে পারে।)
৯। সত্য- কায়, মন ও বাক্য দ্বারা যথার্থ আচরণ করা অর্থাৎ যে পদার্থ যেরূপ তাহাকে সেইরূপ মনে করা, সেইরূপ বলা এবং সেইরূপ করা;
১০। অক্রোধ- ক্রোধাদি দোষ পরিত্যাগ করিয়া শান্তি প্রভৃতি গুণ গ্রহণ করা।