🔸দেবভাষা সংস্কৃত 💐



🙏🌿-নমস্কার-🌿🙏

✍🌿 পৃথিবীতে বহু ভাষাভাষী মানুষ বসবাস করে। ভাষা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে সব ভাষার মধ্যে যে ভাষাকে সব ভাষার মাতৃ-জননী বলা হয় তা হলো সংস্কৃত। এ ভাষা শুধু ধর্মীয় ভাষা নয় এর রয়েছে বিশ্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা। ফলশ্রুতিতে ইউরোপে সংস্কৃত স্কুল এবং বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জনের ব্যবস্থা রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা সংস্কৃত ভাষার মহানতা প্রমাণ করে। পবিত্র বেদাদি শাস্ত্র সমূহ এই ঐশ্বরিক ভাষায় গঠিত। বিভিন্ন দেশে এই সকল সংস্কৃত শ্লোক বা মন্ত্র সমূহ জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। 

নিম্নে বৈদিক শাস্ত্রথেকে অনুপ্রাণিত আদর্শ সমূহ উল্লেখ করা হলো :

✍️🍁 ভারতের সুপ্রীম কোর্টের মাথার উপরে মহাভারতের ভীষ্মপর্ব থেকে নেয়া,

📖 "যতো ধর্মস্ততো জয়ঃ"

অর্থাৎ,  যেখানেই ধর্ম, সেখানেই জয়।মহাভারতের প্রধান শিক্ষাই হল - যথা ধর্ম, তথা জয়। তাই আমাদের সবারই উচিৎ সদা সত্যরূপ ধর্মের শরণে থাকা। 

✍️🍁 ভারতের লোকসভার আদর্শ স্থির করা হয়েছে মহাভারতের 

📖"ধর্মচক্র-প্রবর্তনায়" -এ বাক্যটি।

 অর্থাৎ, লোককল্যাণে ধর্মচক্র প্রবর্তিত হয়েছে।  

✍️🍁ভারতের কেন্দ্রীয় লোকসভা এবং পশ্চিম বাংলার বিধান সভা ভবনের দ্বারদেশে আছে মহাভারতের আরো একটি বিখ্যাত শ্লোক:

📖 ন সা সভা যত্র ন সন্তি বৃদ্ধাঃ
ন তে বৃদ্ধা যে ন বদন্তি ধর্মম্।
নাসৌ ধর্মো যত্র ন সত্যমস্তি ন
তৎ সত্যং যচ্ছলেনানুবিদ্ধম।।
(মহাভারত:উদ্যোগপর্ব, ৩৫.৬১)

অর্থাৎ,  "যেখানে জ্ঞানবৃদ্ধগণ থাকেন না, তা সভাই নয়। তারা জ্ঞানবৃদ্ধ নন, যারা ধর্ম বলেন না। যা ধর্মই নয়, যার মধ্যে সত্য থাকে না। এবং তা সত্যই নয়, যা ছল প্রবঞ্চনায় যুক্ত।"

✍️🍁 অথর্ববেদের শৌনকীয় শাখার অঅন্তর্গত মুণ্ডক উপনিষদ (০৩. ০১. ০৬) থেকে নেওয়া ভারত প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীকের সাথে যুক্ত হিরন্ময় বাক্যটি- 

📖" সত্যমেব জয়তে"।

অর্থাৎ, একমাত্র সত্যই জয়লাভ করে, মিথ্যা নয়। 

✍️🍁 আকাশবাণীর আদর্শ গৃহীত হয়েছে: 

📖 "বহুজনসুখায় বহুজনহিতায়" 

✍️🍁 শিবস্তোত্র থেকে নেওয়া দূরদর্শনের -এর motto বা আদর্শ হলো- 

📖 "সত্যম্ শিবম্ সুন্দরম্।"

✍️🍁 শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা থেকে নেয়া ভারতীয় জীবনবীমার এলআইসি (Life Insurance Corporation of India) এর motto এর আদর্শ হলো- 

📖"যোগক্ষেমং বহাম্যহম্"।

অর্থাৎ, যে অনন্য চিত্তে আমার স্মরণ নেয়, তার সে যা পেতে চায় এবং ক্যা পেয়েছে, তার সংরক্ষণ আমি নিজে স্বয়ং বহন করি। 

শ্রীমদ্ভগবদগীতার নবম অধ্যায়ের সম্পূর্ণ শ্লোকটি হল:

📖 অনন্যাশ্চিন্তয়ন্তো মাং যে জনাঃ পর্যুপাসতে।
তেষাং নিত্যাভিযুক্তানাং যোগক্ষেমং বহাম্যহম্।।
(শ্রীমদ্ভগবদগীতা:৯.২২)

"যে সকল ভক্তগণ অনন্যচিত্ত হয়ে সর্বদা আমাকে উপাসনা করে; আমাতে নিত্য অনন্যচিত্ত সে সমস্ত ভক্তের যোগ ( প্রয়োজনীয় অলব্ধ বস্তুর সংস্থান) এবং ক্ষেম ( লব্ধ বস্তুর সংরক্ষণ) আমিই বহন করে থাকি।"

✍️🍁 ভারতীয় নৌসেনা Indian Navy - এর আদর্শ হলো কৃষ্ণ যজুর্বেদীয় তৈত্তিরীয় উপনিষদ থেকে নেওয়া motto

📖 "শং নো বরুণঃ"। 

অর্থাৎ,  হে জলের অধীশ্বর ভগবান বরুণ আমাদের শান্তি দিন।

✍️🍁 শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার একাদশ অধ্যায় বিশ্বরূপদর্শন যোগের চব্বিশতম শ্লোক থেকে নেয়া হয়েছে IAF (indian Air Force) -এর motto বা আদর্শ 

📖 "নভঃ স্পৃশং দীপ্তম্"।

অর্থাৎ, হে ভগবান, আকাশ স্পর্শী তেজোময় আপনার রূপ।

✍️🍁 মহাভারত থেকে নেয়া হয়েছে- Research and Analysis Wing বা RAW এর আদর্শ 

📖" ধর্মো রক্ষতি রক্ষিতঃ"।

অর্থাৎ, যে ধর্মকে রক্ষা করে, ধর্মও তাকে রক্ষা করে।

সম্পূর্ণ শ্লোকটি হল:

📖 "ধর্ম এব হতো হন্তি ধর্মো রক্ষতি রক্ষিতঃ।
তস্মাদ্ধর্মং ন ত্যজামি মা নো ধর্মো হতো বধীৎ।।
(মহাভারত: বনপর্ব, ২৬৭.৯২)

" যে ব্যক্তি ধর্ম নষ্ট করে, ধর্মই তাকে সমূলে বিনষ্ট করে দেয়। পক্ষান্তরে যিনি ধর্মকে রক্ষা করেন, ধর্মই তাকে সর্বদা রক্ষা করেন। তাই আমি (ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির) ধর্মকে কখনও পরিত্যাগ করি না। কেন না, ধর্ম যদি আমার দ্বারা বিনষ্ট হয়, তবে সে ধর্মই আমাকে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করে দিবে।"

✍️🍁 ভারতীয় ডাক বিভাগের আদর্শ স্থির করা হয়েছে অসাধারণ এক সর্বজনীন বাক্য দিয়ে- 

📖"অহর্নিশং সেবামহে"। 

অর্থাৎ, দিবারাত্রি সেবা দিয়ে যাব নিরন্তর। 

✍️🍁 ঋগ্বেদ থেকে নেয়া Intelligence Bureau এর motto বা আদর্শ হলো-

📖 " জাগৃতং অহর্নিশং"। 

অর্থাৎ,  দিবারাত্রি সদা জাগ্রত।

✍️🍁 Indian Coast Guard -এর motto বা আদর্শ হলো- 

📖" বয়ং রক্ষামঃ"। 

অর্থাৎ,  আমরা রক্ষা করব।

✍️🍁 Defense Research and Development Organisation -এর motto বা আদর্শ হল-

📖"বলস্য মূলং বিজ্ঞানম্।

অর্থাৎ,  সকল বলের উৎস বিজ্ঞান।

✍️🍁 শুধু ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নয়, নেপাল রাষ্ট্রেরও জাতীয় প্রতীকে আছে  রামায়ণের স্বদেশপ্রেমের একটি বিখ্যাত শ্লোক।

📖 "জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী"। 

অর্থাৎ, জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের থেকেও শ্রেষ্ঠ। 

🌿📖 এমন বহু বৈদিক মন্ত্র ও শ্লোক সমূহ মানবজাতিকে প্রেরিত করেছে শ্রেষ্ঠত্বের দিকে। মানব কল্যাণ সম্ভব শুধু ঈশ্বর নির্দেশিত উপায়ে। মানবসৃষ্ট মত বা পথ সমূহ শুধু নিজস্ব জাতি সৃষ্টি করে কোন্দল সৃষ্টি করতে পারে। ধর্ম একটি এবং তার প্রেরণা স্বয়ং ঈশ্বর থেকে এবং বেদই তাহার সংবিধান। তাই সকল মানবজাতিকে পবিত্র বেদ এর দিকে ফিরে জীবনকে আলোকিত করার প্রয়াস করতে হবে। 

⚔️🌿---------------ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি------------🌿⚔️

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন