▪️আমি কেন বেদ পড়বো ❓
🙏 নমস্কার 🙏
"বেদোঃ অখিলো ধর্মমূলম্" - মনুসংহিতা ২.৬ 📖🌿
অর্থাত্, বেদ সকল ধর্মের(মানবতা, ন্যায়পরায়নতা) মূল।
এভাবে মহর্ষি মনু বেদ এর মহিমা বর্ণনা করেছেন মনুসংহিতায়। বেদ মানবজাতির সংবিধান স্বরূপ- এ বিষয় প্রমাণ করার পিছনে রয়েছে উপযুক্ত কারণ বিশেষ। মানবজাতি কেন বেদ অধ্যয়ন করবে এমন প্রশ্ন বিভিন্ন বিধর্মী ও নাস্তিক কতৃক উত্থাপিত সংশয়মূলক প্রশ্ন। সত্যি এমন সংশয় সাধারণ মানুষের মাঝে তৈরি হয়। আজ আলোচনার মাধ্যমে সকলের সংশয় দূর করার প্রচেষ্টা করব।
পবিত্র বেদ অধ্যয়নের কারণ হিসেবে ১০ টি যুক্তি ও প্রমাণ নিম্নে ব্যাখ্যা করা হলো:
📑✍️শাস্ত্রীয় প্রমাণ: অপৌরুষেয় গ্রন্থ হিসেবে বেদই একমাত্র গ্রন্থ যা ঈশ্বর কতৃক প্রণীত যা ঋষিদের হৃদয়ে প্রকাশিত হয়েছে। যার শ্রেষ্ঠত্ব শ্রুতি সমূহে উল্লেখিত,
"এতস্য বা মহতো ভূতস্য নিশ্বসিতমেতত্।
য়ত্ ঋগ্বেদো যজুর্বেদঃ সামবেদোথর্ববেদঃ।।”
-বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৪/৫/১১📖🌿
অর্থাৎ, ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ এবং অথর্ববেদ সেই মহান পরমেশ্বরের নিঃশ্বাস স্বরূপ।
"নাস্তি বেদাৎ পরং শাস্ত্রং" -অত্রিস্মৃতি- ১৪৯ 📖🌿
অর্থাৎ, বেদ হইতে উৎকৃষ্ট শাস্ত্র নেই, অর্থাৎ বেদই প্রধান, বেদই শ্রেষ্ঠ।
📑✍️ইতিহাস সিদ্ধ: মহাভারত ও রামায়ণ ঐতিহাসিক গ্রন্থ। সেসকল গ্রন্থে রয়েছে পবিত্র বেদ পাঠের উল্লেখ এবং বেদ মাহাত্ম্য।
"বেদোক্তঃ পরমো ধর্মঃ"
- মহাভারত,অনুশাসনপর্ব -১৪১/৬৫📖🌿
অর্থাৎ, বেদোক্ত ধর্মই সব থেকে উৎকৃষ্ট (শ্রেষ্ঠ)
📑✍️বিজ্ঞান ভিত্তি : পবিত্র বেদ জ্ঞানের অপার ভান্ডার। ঈশ্বর যে নিয়মে এ সৃষ্টিকে বেঁধেছেন তা শাশ্বত যা বিজ্ঞান হিসেবে পরিচিত। তাই ঈশ্বরের বাণী সমৃদ্ধ গ্রন্থ কখনো অবৈজ্ঞানিক হতে পারে না। পবিত্র বেদ এ রয়েছে এমন বহু বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের প্রমাণ। যেমন:- প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং তার "A Brief history of time" গ্রন্থে বলেছেন এ বিশ্ব পরিণতি বা Fate হবে যে এক সময় এ জগৎ যে বিন্দু থেকে বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিল, তেমনি একসময় এ জগৎ আবার সংকুচিত হয়ে একটি বিন্দুতে বা ০ তে পরিণত হবে যা Big Crunch নামে পরিচিত। এ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বটি এক বাক্যে খুঁজে পাওয়া যায় পবিত্র বেদ এ,
"বেনস্তৎপশ্যন্নিহিতং গুহা সদাত্রবিশ্বং ভবত্যেকনীড়ম।
তস্মিন্নিদং সং চ বি চৈতু সর্বেং স আোতং প্রোতশ্চ বিভু প্রজাসু"।। -যজুর্বেদ ৩২/৮📖🌿
অর্থাৎ, জ্ঞানী ব্যক্তিরা সেই পরমাত্মাকে জ্ঞান দৃষ্টিতে দর্শন করেন যার মধ্যে এই সমগ্র জগৎ আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে এই সমগ্র জগৎ মিলিত হয় এবং তার মধ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়।
ব্যাখ্যা:- তার মধ্যে হতে সমগ্র জগৎ বিস্ফোরণের মাধ্যমে জগৎ সৃষ্টি হয় এবং তার মধ্যে অন্তে সমগ্র জগৎ সংকুচিত হয়ে মিলিত হয়।
🌼শুধু এ তত্ত্বই নয় বরং আরো বহু বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপস্থিতি পবিত্র বেদ এ রয়েছে, যথা, সৃষ্টিতত্ত্ব, চাঁদ, পৃথিবীর গতি, সূর্যের আকর্ষণ, বর্ষচক্র আরো অনেক বিষয় রয়েছে। ( বেদ ও বিজ্ঞান নিয়ে পরবর্তী আলোচনায় প্রমাণ উত্থাপন করা হবে)
📑✍️অনুপ্রেরণা: পবিত্র বেদ এ যেমন রয়েছে ঈশ্বর ও জগৎ এর রহস্য সম্পর্কিত জ্ঞান তেমনি রয়েছে জীবনের পথে অনুপ্রেরণাদায়ী মন্ত্রসমূহ। যা যেকোনো ব্যক্তির হতাশা দূর করতে সক্ষম। যেমন:-
হে মানুষ ওঠো! ওঠে দাড়াও।পতিত হওয়া তোমার স্বভাবজাত নয়।জ্ঞানের আলোকবর্তিকা শুধু মাত্র তোমাকেই দেয়া হয়েছে যা দিয়ে তুমি ঐ সকল অন্ধকূপ এড়িয়ে যেতে পারে।
-অথর্ববেদ ৮/১/৩📖🌿
📑✍️বেদ ও মানবতা: বেদ প্রকৃত ঐশ্বরিক বিধান। সেজন্য এখানে বিদ্বেষ এর স্থান নেই রয়েছে শুধু সাম্য। পবিত্র বেদ আমাদের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয়।
মনুর্ভব জনয়া দৈবং জনম্ - ঋগ্বেদ, ১০/৫৩/৬📖🌿
অর্থাৎ, প্রকৃত মানুষ হও এবং অন্যকেও মানুষ হিসেবে গড়ে তোল।
"অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস এতে সং ভ্রাতরো বাবৃধুঃ" - ঋগ্বেদ ৫/৬০/৫📖🌿
অর্থাৎ তোমরা সকলে ভাই ভাই, কেউ ছোট নয়, কেউ বড় নয়।
📑✍️যুগে যুগে বহু মনীষী বেদ এর জয়গান গেয়েছেন। প্রশংসনীয় মর্যাদা দিয়েছেন বেদ এর শ্রেষ্ঠত্বকে। আজ মানব সমাজ হিংসা বিদ্বেষ এ জর্জরিত। দ্বিধা বিভক্ত সমাজ হয়ে উঠেছে এ পৃথিবীতে। এমন পরিস্থিতিতে ত্রান সম্ভব শুধু বেদ এর পথে। সনাতনীদের একতাবদ্ধ ও মানবিক পৃথিবী প্রতিষ্ঠায় বেদ এর দিকে ফিরে আসতে হবে। সেজন্য মহর্ষি দয়ানন্দজী বলেছেন "বেদ এর দিকে ফিরে এসো" ( Back to vedas ).
"যখন আমি বেদ পড়ি তখন এক অপ্রাকৃত আলোক যেন আমায় আলোকিত করে, এটি এমন একটি গ্রন্থ যাতে কোনো বিভেদ নেই, এটি সকল দেশ, সকল জাতি, সকল কালের জন্য, যেন জ্ঞান অর্জনের এক রাজকীয় পথ"।৷ - হেনরী ডেভিড থরো
প্রচারে: VEDA
🌿---------- ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি ---------🌿
কথোপকথনে যোগ দিন