▪️বেদ ও বিজ্ঞান পর্বঃ- ২


নমস্কার🙏 


▪️বেদ ও বিজ্ঞান পর্বঃ- ২


পবিত্র বেদ কোনো বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ নয় তবে তা বিজ্ঞানময়। পবিত্র বেদ এর বহু মন্ত্রে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপস্থিতি রয়েছে যা বিভিন্ন মহান বিজ্ঞানীগণ কয়েক শতাব্দী পূর্বে আবিষ্কার করেছিলেন। সেসকল মহান বিজ্ঞানীদের প্রতি রইল সশ্রদ্ধ প্রণাম। বেদ ও বিজ্ঞান পর্বে ২য় পর্বে আমরা আলোচনা করব নিকোলাস কোপারনিকাস এর ঐতিহাসিক তত্ত্ব যে সূর্য নয় পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। যা বিজ্ঞান মহলে কোপারনিকাস বিপ্লব নামে খ্যাত। 


প্রাচীন কাল থেকে মানুষ এ মহাবিশ্ব নিয়ে কৌতুহল এর অন্ত নেই। পূর্বে মানুষ বিশ্বাস করতো যে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য সহ বাকি গ্রহ সমূহ ঘুরছে।

বহুবছর আগে গ্রিক যুগের একজন প্রখ্যাত

জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লডিয়াস টলেমি বলেছিলেন: পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্যসহ অন্যান্য গ্রহনক্ষত্রগুলো আবর্তিত হয়। কিন্তু তখন টেলিস্কোপ ছিল না বলে তার সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে নিকোলাস কোপারনিকাস এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। 


নিকোলাস কোপারনিকাস প্রথম এ তত্ত্ব দেন যে, পৃথিবী নয়, সূর্যই হলো সৌরজগতের কেন্দ্রবিন্দু। সূর্যই সমগ্র সৌরজগতকে আলোকিত করে। তাঁর মতবাদের নাম: ‘কোপারনিকীয় মতবাদ’। তবে তাঁর গবেষণালব্ধ মতবাদসমূহ চাপাতে সাহস করেন নি, কারণ তিনি ছিলেন গির্জার যাজক। তাঁর মতবাদ প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিরোধী। তাঁর বিপ্লবাত্মক মতবাদ লিপিবদ্ধ হওয়ার পরেও দীর্ঘ প্রায় তেরো বছর অপ্রকাশিত রাখতে হয়। গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৫৪৩ সালে। মৃত্যুর মাত্র ঘণ্টাখানেক আগে। গ্রন্থটির নাম: ‘'DE REVALUTIONIBUS ORBIUM CELESTIM'’ । কোপারনিকাস আরো বলেন, সূর্যের চারিদিকে পৃথিবী ঘোরে বলেই ঋতু পরিবর্তন সম্ভব। আর পৃথিবী তাঁর নিজ অক্ষের উপর আবর্তিত হয় বলেই দিন—রাত্রি হয়। 


কিন্তু আশ্চর্য হলে সত্যি  নিকোলাস কোপারনিকাস এর বহু পূর্বে এ তত্ত্ব পবিত্র বেদ এ উল্লেখ রয়েছে। যা সত্যি অবাক করার মতো বিষয় হলেও বিশুদ্ধ সত্য।

 বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব সমৃদ্ধ মন্ত্র সমূহ:


তত্ত্ব ০১:- পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে 🌼


"আহস্তা যদপদী বর্ধত ক্ষাঃ শচীভের্বদ্যানাম্।

শুষ্ণং পরিপ্রদিক্ষণিদ্ বিশ্বায়বে নিশ্বিশ্নথঃ"।।

-ঋগ্বেদ ১০/২২/১৪📖🌿


⚜পদার্থ: (আহস্তা) হস্ত রহিত (যদ্) যদ্যপি (অপদী) পদশূন্য  (বর্ধত) চলিতেছে (ক্ষাঃ) পৃথিবী (শচীভিঃ) পরমাণু শক্তি দ্বারা (বেদ্যানাম্) জানিবার যোগ্য (শুষ্ণম্ পরি) সূর্যের চারদিকে (প্রদিক্ষণিৎ) প্রদক্ষিণ করিয়া (বিশ্বায়বে) সব মানুষের বিশ্বাসের জন্য (নিশ্বিশ্নথঃ) এইরূপ রচনা করিয়াছেন ।


অর্থাৎ, যদিও পৃথিবী হস্তপদহীন তবুও ইহা চলিতেছে। অবশ্যই জ্ঞাতব্য পরমাণু শক্তি দ্বারা সূর্যের চারদিকে ইহা প্রদক্ষিণ করিতেছে। হে পরমাত্মন্! সমগ্র মানবের মধ্যে আস্তিক্যবোধ জাগাবার জন্যই তুমি এইরূপ রচনা করিয়াছো ।


তত্ত্ব ০২:- সূর্য নিজেও গতিশীল এবং পরিভ্রমণ করিতেছে🌼


"সবিতা যন্ত্রৈঃ পৃথিবীমরভ্নাদস্কম্ভনে সবিতা দ্যামদৃংহৎ।

অশ্বমীবাধুক্ষদ্ধু-নিমন্তরিক্ষমতূর্তে বন্ধং সবিতা সমূদ্রম্"।।  -ঋগ্বেদ ১০/১৪৯/১📖🌿


অর্থাৎ, সূর্য রজ্জুবৎ আকর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে বাঁধিয়া রাখিয়াছে। নিরাধার আকাশে দ্যূলোকের অন্যান্য গ্রহকেও ইহা সুদৃঢ় রাখিয়াছে। অচ্ছেদ্য আকর্ষণ রজ্জুতে আবদ্ধ, গর্জনশীল, গ্রহসমূহ নিরাধার আকাশে অশ্বের ন্যায় পরিভ্রমণ করিতেছে।


"আকৃষ্ণেন রজসা বর্তমানো নিবেশয়ন্নমৃতং মর্তঞ্চ।

হিরণ্ময়েন সবিতা রথেনা দেবো যাতি ভুবনানি পশ্যন্"।। -ঋগ্বেদ ১/৩৫/২📖🌿


অর্থাৎ, সূর্য আকর্ষনযুক্ত পৃথিব্যাদি লোক লোকান্তরকে সঙ্গে রাখিয়া নশ্বর অবিনশ্বর উভয় পদার্থকে নিজ নিজ কার্য্যে নিযুক্ত রাখিয়া এবং মাধ্যাকর্ষন স্বরূপ রথে চড়িয়া যেন সারা লোকান্তরকে দেখিতে দেখিতে গমন করিতেছে।


⁉️সংশয়: এরুপ মন্ত্র অনুসরণ করলে একটি প্রশ্ন আসে যে এ তত্ত্ব কি শুধু একটি সূর্যকে নিয়ে। কিন্তু মহাবিশ্বে তো অগণিত আলোকিত নক্ষত্র রয়েছে সূর্যের মতো। 


সংশয় নিবারণ: এমন প্রশ্নের উত্তর পবিত্র বেদ এর রয়েছে। যথা:- 


"দিশো নানাসূর্যাঃ" -ঋগ্বেদ ৯/১১৪/৩📖🌿


অর্থাৎ, সপ্ত দিকে অগনিত সূর্য রহিয়াছে। 


পবিত্র বেদ সকল জ্ঞানের ধারক। যাহা কিছু সত্য তাহা বেদবিহিত। বেদ কখনো মিথ্যাকে আশ্রয় দেয় না। এমন বহু বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উল্লেখ পবিত্র বেদ এ রয়েছে। অজ্ঞানতা স্বরুপ পবিত্র বেদ এর সত্যকে আমরা এড়িয়ে চলি। ফলস্বরূপ ধর্মান্তর, কুসংস্কার, ও অমানবিকতা এবং ব্যাভিচার সমাজে ছেয়ে গেছে। তাই আসুন বেদ পড়ি এবং আলোর দিকে ফিরে আসি। 


 🌼🖤BACK TO VEDAS🖤🌼


প্রচারে: VEDA 


🌿----------ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি ----------🌿

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

🔸সনাতন ধর্ম ও নারী 💐

সনাতন ধর্মে কি গোমূত্র পানের উল্লেখ রয়েছে ⁉️

▪️একাদশী" কি শাস্ত্র সম্মত ❓