দেশপ্রেম ও বৈদিক শাস্ত্র
"মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা"। 🇧🇩🌿
"ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
ও সে সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি"।।
- দ্বিজেন্দ্রলাল রায়🎶🇧🇩🌿
📖ওঁ তৎ সৎ📖
🇧🇩✍️নব প্রভাতে নতুন দিনের আলোয় পরিপূর্ণ এ মাতৃভূমি। আজ আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু এ স্বাধীনতা বিনামূল্যে আসেনি। ৩০ লক্ষ শহীদের ও ২ লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের বিজয় অর্জন হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহস ও দেশপ্রেম পাক-হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা।
📑✍️পবিত্র বেদ ও স্মৃতিশাস্ত্র আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার উৎস। আজ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা বৈদিক শাস্ত্র ও দেশপ্রেম নিয়ে আলোচনা করব।
"ইলা সরসতী মহী তিস্রো দেবীর্ময়োভুবঃ।
বহিঃ সীধন্ত্বস্রিধঃ"।। - ঋগ্বেদ ১/১৩/৯📖🌿
অর্থাৎ, মাতৃভাষা, মাতৃসভ্যতা ও মাতৃভূমি এই তিনদেবী কল্যাণ দান করেন। এই তিন দেবতা আমাদের অন্তঃকরণে স্থায়ীভাবে অবস্থান করুন।
"বিশ্বংভরা বসুধানী প্রতিষ্ঠা হিরণ্যবক্ষা জগতো
নিবেশানী।
বৈশ্বানরং বিভ্রতি ভূমিরগ্নিমিন্দ্র ঋষভা দ্রবিণে ন দধাতু"।। - অথর্ববেদ ১২/১/৬📖🌿
অর্থাৎ, বিশ্বম্ভরা, বসুধা, সর্বাধার, স্বর্ণপ্রসু,
জীবনিবাস্ জনগণের ধাত্রী, পরমাত্মার
স্নেহসিক্তা মাতৃভূমি আমাকে ধনরত্মে সমৃদ্ধিশালী
করুক।
"বিশ্বস্বং মাতরমমোষাধীনাং ধ্রুবাং ভূমিং পৃথিবীং ধর্মণা ধৃতাম্।
শিবাং স্যোনামনু চরেম বিশ্ব-হা"।।
-অথর্ববেদ ১২/১/১৭📖🌿
অর্থাৎ, ওষুধি সমূহের মাতা, কল্যাণকারিণী ,
সুখদায়িনী, ধর্মকর্ত্তৃক ধৃতা এই স্থির ও বিস্তৃত
মাতৃভূমিকে সর্বস্ব অর্পণ করিয়া সর্বদা সেবা করিব।
ভূমে মাতর্নি ধেহি মা ভদ্রয়া সুপ্রতিষ্ঠিতম।
সংবিদানা দিবা কবে শ্রিয়াং মা ধেহি ভূত্যাম।
( অথর্ববেদ : দ্বাদশ কাণ্ড, প্রথম অনুবাক)
"হে মাতৃভূমি, তুমি আমায় কল্যাণের পথে সদা সুপ্রতিষ্ঠিত কর। হে জ্ঞানস্বরূপা কাব্যময়ী মাতৃভূমি, তুমি দিনের আলোর ন্যায় আমায় উদ্ভাসিত করে সদা শ্রীযুক্ত এবং পশু-পাখি, মানব সহ পৃথিবীর সকল ভূতজগতের সাথে সদা যুক্ত রেখ।"
দেশপ্রেম নিয়ে মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এর বিখ্যাত উক্তি রয়েছে যা নেপালের জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে,
"মিত্রাণি ধন ধান্যানি প্রজানাং সম্মতানিব।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরিয়সী"।।
অর্থাৎ, মিত্র, ধন ও ধান্যকে পৃথিবীতে সম্মানিত করা হয়। কিন্তু জননী ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও শ্রেয়।
🇧🇩✍️পবিত্র বেদ ও বৈদিক শাস্ত্রের শিক্ষা প্রত্যেক সনাতনী নিজের মাঝে আত্মস্থ করে। সেজন্য ১৯৭১ সালে একজন রাজাকার খুঁজে পাওয়া যাবে না সনাতনী সমাজ থেকে। যেখানে সবথেকে বেশি নির্যাতন ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের শিকার হয় সনাতনধর্মালম্বীগণ। কিন্তু তারা নিজে মাতৃভূমির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। বরং বহু মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের আত্মবিসর্জন দেয় দেশ ও স্বাধীনতার প্রশ্নে। আজ এই বিজয় উল্লাসে এই হোক প্রত্যয়, সাম্প্রদায়িকতা ভুলে মানুষ হিসেবে একটি মানবিক সমাজ ও দেশ গঠন করি। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে স্বদেশ এর প্রতি পালন করি নিজ নিজ দায়িত্ব। সুন্দর প্রভাতের আশা নিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ,
"বিশ কোটি কন্ঠে মা ব'লে ডাকিলে রোমাঞ্চ উঠিবে অনন্ত নিখিলে,
বিশ কোটি ছেলে মায়েরে ঘেরিলে দশ দিক সুখে হাসিবে ।
সেদিন প্রভাতে নূতন তপন নূতন জীবন করিবে বপন
এ নহে কাহিনী, এ নহে স্বপন
— আসিবে সে দিন আসিবে ।।"
প্রচারে: VEDA
মন্তব্যসমূহ