প্রাচীন ভারতের ব্যাটারি আবিষ্কার। ঋষি অগস্ত্য
নমস্কার।
আমরা "অগস্ত্য যাত্রা" প্রবাদ বাক্যের সাথে খুবই পরিচিত। এর অর্থ, শেষ যাত্রা। অগাস্ত্য মুনির শেষ যাত্রা সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা হলেও তার রচিত অগস্ত্য সংহিতা নিয়ে আলোচনা খুবই ক্ষীণ। তবে ঋষি অগাস্ত্য কতৃক প্রণীত এ মহান গ্রন্থ এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মধ্যে এক সম্পর্ক রয়েছে। যা বর্তমান সময়ে এসেও লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে।
তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো ঋষি অগস্ত্য এবং তার প্রণীত অগস্ত্য সংহিতায় আধুনিক ব্যাটারি আবিষ্কার এর তত্ত্বের উপস্থিতি।
আমরা সকলে বর্তমান সময়ে জ্ঞান বিজ্ঞান এর প্রসারের ফলে জানি যে, ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, আলেসান্দ্রো ভোল্টা ব্যাটারী বা বিদ্যুৎ কোষ আবিষ্কার করেন। যা সকল মহল কতৃক স্বীকৃত একটি সত্য। কিন্তু আলেসান্দ্রো ভোল্টা এর বহু পূর্বে ঋষি অগস্ত্য কতৃক তার অগস্ত্য সংহিতায় ব্যাটারী তৈরির ফর্মুলা প্রদান করেন।
অগস্ত্য সংহিতা ও বৈদ্যুতিক ব্যাটারী:-
সংস্থপ্য মৃন্ময় পাত্রে তাম্রপাত্রম সুসংস্কৃতম ছদ্যে শিখিগ্রিবেন, ছরদ্রবিহ, কাষ্ঠপমসুবিহ।
দস্থালস্থ নিধত্যহ পর্দাচ্ছদিতস্থহ সন্যােগজ্জতে তেজ মিত্রবরুণসংগ্যিতম। - অগস্ত্য সংহিতা 📖🌿
অর্থাৎ, একটি মৃত্তিকাপাত্র নাও, তাতে একটি তাম্র শিট দাও এবং একটি শীখগ্রীবা স্থাপন কর। এতে কাষ্ঠগুড়ো, দস্তা এবং পারদ ছিটিয়ে দাও, এরপর সেখানে তার সংযুক্ত করলে তুমি মিত্রবরুণ শক্তিকে পাবে।
মাটির পাত্র + কপার প্লেট + কপার সালফেট + কাঠের গুড়ো + জিংক + পারদ = বিদ্যুৎ কোষ বা ব্যাটারী
এরুপ বিশ্লেষণ থেকে আমরা সহজে উপলব্ধি করতে পারি যে অগস্ত্য মুনি তার গ্রন্থে বর্তমান বৈদ্যুতিক ব্যাটারি আবিষ্কারের সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
কিন্তু অগস্ত্য মুনির এরুপ আবিষ্কার সবার সম্মুখে নিয়ে আসেন?
Vaman Ramachandra Kokatnur ১৮৮৭ - ১৮ এপ্রিল ১৯৫০) ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন আমেরিকান রসায়নবিদ ছিলেন। ১৯২৭ সালে American Chemical Society এর সভায় তিনি সবার সামনে অগস্ত্য সংহিতার উক্ত শ্লোক উচ্চারণ করার সাথে সাথে সে অনুযায়ী একটি ব্যাটারী তৈরি করে প্রমাণ করেন বিদ্যুৎ কোষের আবিষ্কার অগস্ত্য সংহিতায় সর্বপ্রথম রয়েছে। যখন ভোল্ট দ্বারা
Vaman Ramachandra Kokatnur এর সদ্য তৈরিকৃত ব্যাটারির চার্জ পরিক্ষা করা হয় তার গ্রিডিং আসে ১.৪।
তিনি আরো বলেন, প্রাচীন ভারতীয় ঋষিগণ অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের প্রথম ধারণা দেন। যা অগস্ত্য সংহিতার আরেকটি শ্লোকে বিদ্যমান।
"আনেন জলভগ্নোস্তি প্রান দানেসু বায়েসু
ইবম শতনম কুম্ভনমসয়োগকারী অকৃতস্মৃতহ" 📖🌿
অর্থাৎ, যদি এরুপ একশত মৃত্তিকা পাত্রের শক্তি আমরা ব্যবহার করি, তবে জল প্রাণদানকারী অক্সিজেন ও ভাসমান হাইড্রোজেন এ বিভক্ত হবে।
এখানে স্পষ্টত অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন এর উপস্থিতির কথা বলা হয়েছে। কারণ, জলের জল বা পানির রাসায়নিক সংকেত হল H2O। ইউপ্যাক (IUPAC) নিয়ম অনুযায়ী পানির রাসায়নিক নাম ডাইহাইড্রোজেন মনোঅক্সাইড। অর্থাৎ জল বা পানির একেকটি অণু একটি অক্সিজেন পরমাণু এবং দু'টি হাইড্রোজেন পরমাণুর সমযোজী বন্ধনে গঠিত।
পরের শ্লোকটি আরো বিশ্লেষণপূর্ণ,
"বায়ুবন্ধকবস্ত্রেন নিবদ্ধ য়েনমস্তকে
উদান স্বলঘুত্বে বিভর্তকষ্যায়ন্কম" 📖🌿
অর্থাৎ, বায়ুকে(হাইড্রোজেন) বায়ুনিরোধী কাপড়ে আবদ্ধ করলে তাকে আকাশে উড়ানো সম্ভব।
স্পষ্টত এখানে বেলুন এর মতো বস্তুর দিকে নির্দেশ করে।
আমরা আমাদের সুমহান ইতিহাসকে স্মরণ করে গর্ববোধ করি। এবং প্রাচীন ঋষিদের অবদানকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করি। বহু বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপস্থিতি আমাদের গ্রন্থ সমূহে উল্লেখ রয়েছে। যা আমাদের জানা অত্যাবশকীয়। যদিও অনেক বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব এর উপস্থিতি আমাদের গ্রন্থ সমূহে উল্লেখ রয়েছে তবু সেগুলোর আধুনিক আবিষ্কার এর কৃতিত্ব অর্জনকারীদের জানাই সম্মান। কারণ পবিত্র বেদ আমাদের সকলকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে শেখায়।
প্রচারে: VEDA
মন্তব্যসমূহ