🌿🌼নমস্কার সকল অমৃতের সন্তানগণ🌼🌿
📖✍️এ ধরিত্রীর মাঝে আমাদের বসবাস। আমরা সকলে অমৃতের সন্তান। নিজেদের মোক্ষ অভিমুখে পরিচালিত করাই আমাদের জীবনের পরম উদ্দেশ্য। সে যাত্রা অভিমুখে নিজেদের নিয়ে যাওয়া জন্য প্রয়োজন আদর্শ। কারণ, সমাজের শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তিরা যাহা করে, সাধারণ মানুষ তা অনুসরণ করে। সেজন্য যোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবদগীতায় বলেছেন,
"য়দ্ য়দ্ আচরতি শ্রেষ্ঠস্তত্তদেবেতরো জনঃ।
স য়ৎ প্রমাণং কুরুতে লোকস্তদনুবর্ততে।।"
- গীতা ৩/২১📖🌿
অর্থাৎ, শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা যা যা আচরণ করেন, সাধারণেরা সেরূপই আচরণ করে। তিনি যা প্রামাণিক করেন, লোকেরা তারই অনুবর্তন করে।
আর্যাবর্তে সে শ্রেষ্ঠ চরিত্রের মধ্যে যিনি সর্বোত্তম বলে খ্যাত, যার আদর্শকে সকল মানুষ অনুসরণ করে, যার দৃষ্টান্ত দিয়ে সকলকে নীতি নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান করা হয়, তিনি মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম।
মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম ইতিহাসের এমন এক চরিত্র, যিনি একজন আদর্শ শাসক, সন্তান, স্বামী,ভ্রাতা হিসেবে পূর্ণ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। তাই VEDA পেজ থেকে মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এর জীবনী পর্যায়ক্রমে সকলের মাঝে উপস্থাপন করা হবে।
🚩------- রাম রাজ্য ও আদর্শ শাসক -------🚩
✍️একজন শাসক হিসেবে মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম ছিলেন অনন্য। যুগের পর যুগ ধরে তার রাম রাজ্যকে সকলে আদর্শ রাজ্য হিসেবে উদাহরণ দিয়ে থাকে। এ যেন বর্তমান সময়ের বহুল আকাঙ্ক্ষিত কল্যাণ রাষ্ট্র।
তবে কেমন ছিলো মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এর রাম রাজ্য ⁉️
"ন পর্যদেবেন বিধবা ন চ ব্যালকৃতং ভয়ম৷
ন ব্যধিজং ভয়ং চাসীদ্ রামে রাজ্যং প্রশাসতি"।।
- বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধকান্ড ১২৮/৯৮ 📖🌿
⚜️রামের শাসনকালে বিধবাদের ক্রন্দন শোনা যেত না, হিংস্র প্রাণীর ভয় ছিলো না, ব্যাধি থেকে উৎপন্ন ভয়ও ছিলো না অর্থাৎ রোগ কাউকে কষ্ট দিতো না।
নির্দস্যুরভবল্লোকো নানর্থং কশ্চিদস্পৃশৎ ।
ন চ স্ম বৃদ্ধা বালানাং প্রেতকার্যানি কুৰ্বতে।।
- বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধকান্ড ১২৮/৯৯ 📖🌿
⚜️ প্রজাগণ চোর-ডাকাতের ভয় থেকে রহিত, কেউ কারো প্রতি অনর্থ বা পাপ করতো না। বৃদ্ধদের সম্মুখে শিশুদের মৃত্যু হতো না।
সর্ব মুদিতমেবাসীৎ সর্বো ধর্মপরো্যভবৎ।
রামমেবানুপশ্যন্তো নাভ্যহিংসন্ পরস্পরম্।।
- বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধকান্ড ১২৮/১০০ 📖🌿
⚜️সকলেই সন্তুষ্ট ছিলো, সকলেই ধর্মপরায়ণ ছিলো, রামকে স্মরণে রেখে পরস্পর হিংসা করতো না।
"আসন্ বর্ষসহস্রানি ততা পুত্র সহশ্রিনঃ"
- বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধকান্ড ১২৮/১০১📖🌿
⚜️ অনেক পুত্র-পৌত্র যুক্ত বংশ সহস্র বর্ষ পর্যন্ত চলত।
মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এমন রাজ্য পরিচালনা করতে যা একজন আদর্শ রাজা কর্তৃক পরিচালিত হতে পারে। মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এর জীবন ছিলো বেদবিহিত ও ধর্মপরায়ণ। যার ফলে তিনি একজন আদর্শ শাসক হয়ে উঠেন।
"যস্মিন ন চলতে ধর্মো যো ধর্মে নাতিবর্ততে।
যো ব্রাহ্মস্ত্রং বেদ বেদান বেদবিদাংবরঃ"।।
- বাল্মিকী রামায়ণ যুদ্ধকান্ড ২৮/১৯ 📖🌿
⚜️ যে রামে ধর্ম চলায়মান নয়, যিনি ধর্মের অতিক্রমন করেন না, বেদবিশারদদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, তিনি ব্রহ্মাস্ত্রকে জানেন।
যেমন পবিত্র বেদ একজন উত্তম শাসকের গুণাবলি বর্ণন করে,
"তাহি শ্রেষ্ঠ বর্চসা রাজানা দীর্ঘশ্রুত্তমা।
তা সৎ পতী ঋতাবৃধ ঋতাবানা জনে জনে"।।
-ঋগ্বেদ ৫/৬৫/২📖🌿
অর্থাৎ, শাসককে মহা তেজস্বী, অত্যন্ত জ্ঞানী, সুরক্ষক, সত্যের সহিত বর্ধ্বনশীল এবং প্রত্যেক সংঘে সত্যের প্রতিপালক হইতে হবে"।
"ধৃতব্রতাঃ ক্ষত্রিয়া যজ্ঞ নিষ্কৃতো বৃহদ্বিবা অধ্বুরাণামভিশ্রিয়:।
অগ্নিহোতার ঋতসাপো অদ্রুহোহপো অসৃজন্ননু বৃত্রতূর্যে"।। - ঋগ্বেদ ১০/৬৬/৮📖🌿
অর্থাৎ, ব্রতনিষ্ঠ, যজ্ঞকর্তা, অত্যন্ত তেজস্বী, অহিংস কর্মা, অগ্নিহোত্রী, সত্যনিষ্ঠা, শঠতাহীন ক্ষত্রিয়রাই সম্মুখ সংগ্রামে কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করিতে পারে।
মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ শাসক। তিনি নিজেকে শাসক নয় একজন সেবক হিসেবে সকলের নিকট পৌঁছে যেতেন। আজকের আধুনিক যুগে সবাই সে কল্যাণকামী শাসক, কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রত্যাশা। সে কল্যাণকামী শাসকের সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম। সে কল্যাণ রাষ্ট্রের সর্বোত্তম রাষ্ট্র হলো রাম রাজ্য।
পর্ব ০১ - রাম রাজ্য ও আদর্শ শাসক
জয় সনাতন - জয় শ্রীরাম
প্রচারে: VEDA