আমাদের জন্মগ্রহণে এত বৈচিত্র্যতা ও ভেদাভেদ কেন 🤔 ⁉️
✨ জন্মান্তরবাদ অনুসারে প্রতিটি মনুষ্য কর্মফলের বন্ধন থেকে মোক্ষ অর্জন ব্যতীত বারংবার জন্মমৃত্যুর ঘূর্ণাবর্তে আবদ্ধ থাকবে। আমাদের বর্তমান জন্মগ্রহণ নিশ্চিত রুপে পূর্ব জন্মের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ হয়েছে। যদি পুণর্জন্ম ধারণাকে অস্বীকার করা হয়, তবে একটি সংশয় উদীয়মান হয়ে উঠে যে, তাহলে আমাদের জীবাত্মার দেহলাভের এত ভেদাভেদ ও বৈচিত্র্যতা কেন? কেন কেউ জন্মলাভ করে পশু দেহে, কেউ বা জন্মগ্রহণ করে অতি বিদ্বান কিংবা ধার্মিক পরিবারে? ঈশ্বর যদি সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক ও নিরপেক্ষ হয়ে থাকেন তবে তিনি কেন এমন বৈষম্য করবেন? এরুপ সংশয় নিবারণে যোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবদগীতায় এই রহস্য ভেদ করে বলেছেন,
"যদা সত্ত্বে প্রবৃদ্ধে তু প্রলয়ং যাতি দেহভৃৎ।
তদোত্তমবিদাং লোকানমলান্ প্রতিপদ্যতে ।
রজসি প্রলয়ং গত্বা কর্মসঙ্গিযু জায়তে।
তথা প্ৰলীনস্তমসি মূঢ়যোনিষু জায়তে৷।"
- গীতা ১৪/১৪-১৫
অর্থাৎ, প্রাণধারী জীব নিশ্চিতভাবে সত্ত্বগুণের বৃদ্ধিতে যখন মৃত্যু প্রাপ্ত হয় তখন উত্তম সাধকের ন্যায় নির্মল জন্ম প্রাপ্ত হয়। রজোগুণের বৃদ্ধিতে মৃত্যু প্রাপ্ত হলে কর্মে আসক্ত মানুষের যোনিতে জন্মগ্রহণ করে এবং তমোগুণের বৃদ্ধিতে মৃতব্যক্তি অজ্ঞানী মানুষের বা পশু আদি যোনিতে জন্মগ্রহণ করে।
উপরোক্ত শ্লোক থেকে ইহা প্রকাশ্য দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, জীবাত্মার কর্মই তাহার পরবর্তী অবস্থান নির্ধারণ করে। ঈশ্বর শুধু জীবাত্মার কর্মের ফল প্রদান করেন, কিন্তু জীবাত্মা কর্মে স্বাধীন। তবে এটাও সত্যি যে, উপযুক্ত স্থানে জন্মলাভ করে সেই অবস্থান থেকে ধর্মানুসারে কর্ম করে ধীরে ধীরে মোক্ষ অর্জন করতে হবে, নচেৎ এরুপ স্থান থেকে পদস্খলন হলে পুনরায় নিম্ন যোনি প্রাপ্ত হবে, যা অধঃপতনকে নির্দেশ করে। এবং যারা পূর্ববর্তী জন্মের কৃত ভুল পদক্ষেপ থেকে নিজেকে সরিয়ে ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাত্রা করবে। ঈশ্বর প্রতিটি অবস্থান থেকে আপনার আমার জন্য তাহার দিকে অগ্রসর এর পথ উন্মুক্ত রেখেছেন।
প্রচারে : VEDA
#veda