💥 সকল বৈদিক শাস্ত্র তথা গীতা গায়ত্রী মন্ত্রকে একবাক্য মহামন্ত্র স্বীকৃতি দিয়েছেন।
🔷 গীতার ১০/৩৫ বলা হয়েছে, ছন্দ (মন্ত্র) সমূহে মাঝে আমি (পরমাত্মা) গায়ত্রী।
অর্থাৎ, পৃথিবীতে যত মন্ত্র আছে, সবকিছুর ঊর্ধ্বে গায়ত্রীকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
🔷 এছাড়াও, গীতার ৮/১৩ শ্লোকে ওঁ-কার জপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র বেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্ত্র বলা হয়েছে এই গায়ত্রী মন্ত্রকে। এই মন্ত্রের দেবতা সবিতা। দ্রষ্টা ঋষি বিশ্বমিত্র।গায়ত্রী মন্ত্রের নামই গুরুমন্ত্র।'গুরু' অর্থ শ্রেষ্ঠ।
♦ মনুসংহিতা বলছে-
ওঙ্কারপূর্বিকাস্তিস্রো মহাব্যাহৃতয়েহিব্যায়াঃ
ত্রিপদা চৈব সাবিত্রী বিজ্ঞেয়ং ব্রহ্মণো মুখম।।
(মনুসংহিতা ২/৮১)
অর্থাৎ পূর্বে ওঙ্কার এবং অবিনাশী মহাব্যাহৃতি(ভূঃ,ভুবঃ,স্বঃ) উচ্চারণপূর্বক ত্রিপদী
#গায়ত্রী_হল_পরব্রহ্ম_প্রাপ্তির_একমাত্র_উপায় বলে জানবে।
♦ মনুসংহিতা ২/৮৩ তে বলছে,
"সাবিত্র্যাস্ত পরং নাস্তি"...
অর্থাৎ #গায়ত্রীর_চেয়ে_উৎকৃষ্ট_মহামন্ত্র আর কিছুই নেই।
🔷 পবিত্র বেদের ৪ টি ভাগেই পরমাত্মা গায়ত্রী জ্ঞান প্রদান করেছেন এমন ই এই মহিমা।সকল হিন্দুধর্মালম্বীদের জন্যেই এই মন্ত্রে উপনয়ন-দীক্ষা নেয়া নিয়ম বলে ঘোষণা করেছে বৈদিক সকল শাস্ত্র।
গায়ত্রী মন্ত্র-
ওঁ ভূঃ ভূবঃ স্বঃ তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি।
ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।।
🔷 কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গায়ত্রী মন্ত্রের নিম্নলিখিত অনুবাদ করেনঃ-
"যাঁ হতে বাহিরে ছড়ায়ে পড়িছে
পৃথিবী আকাশ তারা ,
যাঁ হতে আমার অন্তরে আসে
বুদ্ধি চেতনা ধারা—
তাঁরি পূজনীয় অসীম শক্তি
ধ্যান করি আমি লইয়া ভক্তি"।
🔷 ছান্দেগ্য উপনিষদ ঘোষণা করেছে-
গায়ত্রী বা ইদং সর্বং ভুতং যদিদং কিঞ্চ বাগ্বৈ গায়ত্রী।
বাগবা ইদং সর্ব ভুতং গায়তি চ ত্রায়তে চ।।
(ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩/১২/১)
অনুবাদ-
এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে যাহাই কিছু দেখা যায়, তাহার মধ্যে বাণীরাজ রাজেশ্বরী গায়ত্রীগুরু বাণীই সর্বশ্রেষ্ঠ। সমস্ত সংসারের সকলেরই একই মান্যতা।
#কেবল_গায়ত্রী_মন্ত্রই_সকলের_একমাত্র_মুক্তির_পথ।
🌸 তাই সবাই সর্বদা মহামন্ত্র গায়ত্রী জপ করুন,মনকে শুদ্ধ করুন ও ঈশ্বর ভাবনায় নিযুক্ত হোন। 🌸
♦ সনাতন আইনশাস্ত্র তথা মানবজাতির প্রধান ধর্ম গ্রন্থ বেদ এবং অবশ্যপাঠ্য। কয়েকশতক আগেও বেদ শব্দটি ছিল প্রতিটি সনাতনিদের প্রাত্যাহিক জীবনের সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে,অজ্ঞান তার করালগ্রাসে, ঔপনিবেশিকদের চক্রান্তে, তথাকথিত ধর্মপ্রচারক তথা ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে আমরা আজ মহান বেদের পথ থেকে দূরে সরে গিয়েছি। ফলস্বরূপ আমরা আজ জাতি হিসেবে এক ক্রান্তিলগ্নে দাড়িয়ে । জ্ঞানের অভাবে অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে অপমানের স্বীকার তো বটেই, নিজেদের প্রতিদিনকার জীবনযাপনেও অজ্ঞতার গ্লানিবয়ে নিয়ে চলেছি নিরন্তর।
♦ যেখানে পরমাত্মা বেদে বলেই দিয়েছেনঃ-
★অংতি সন্তং ন জহাত্যন্তি সন্তং ন পশ্যতি। দেবস্য পশ্য কাব্যং ন মমার ন জীর্ঘতি। (অথর্ববেদ ১০.৮.৩২)
#সরলার্থঃ মনুষ্য সমীপবর্ত্তী পরমাত্মাকে দেখেও না, তাহাকে ছাড়িতেও পারে না। পরমাত্মাাার কাব্যকে (বেদকে) দেখ, তাহা মরেও না, জীর্ণও হয় না।
♦ অর্থাৎ বেদ সকল যুগ ও কালের জন্য প্রযোজ্য। এর বাণী কখনো অপ্রাসঙ্গিক হয়না,অচল হয়না। বেদ মন্ত্ৰ কলিযুগে নিষ্ক্রিয়-এ ধরনের অহেতুক প্রলাপ অনর্থক। বেদ সর্বযুগেই সমানভাবে প্রযোজ্য এবং তা সর্বদা আধুনিক । যেখানে বেদ বলছে এটা সব যুগের জন্য প্রযোজ্য সেখানে কতিপয় অজ্ঞানীদের এহেন আচরন হাস্যজনক ।
♦ তাছাড়া এসব অবান্তর যুক্তি যারা পেশ করেন তারা নিজেরা কি কখনও বেদ পড়েছেন তাদের কথার সত্যতা যাচাই এর জন্য? তাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি, পারলে বেদের এমন কোন নিয়ম দেখান যা বর্তমান যুগের জন্য প্রযোজ্য নয় । বরং এটা কলি যুগে আরও বেশি প্রয়োজন কারন বেদের কর্মকাণ্ড প্রতিদিনের নিত্যকর্মাদি, বিজ্ঞান,আইন, অর্থনীতি, রাজনীতি জ্ঞান কর্ম উপাসনা অর্থাৎ ধর্ম অর্থ কাম মোক্ষ সহ মানব জাতির প্রয়োজনীয় সকল কিছু আছে যা সত্য যুগের তুলনায় কলি যুগেই বেশী দরকার।
♦ সৃষ্টির প্রথম হতে আরম্ভ করে আজও সেই বেদ জগতে প্রচারিত । বেদ ঈশ্বরীয় জ্ঞান, তাই ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্তমান তিন কালেই সমানভাবেই একই অবস্থায় সুপ্রতিষ্ঠিত।এ জ্ঞানের নাশ নাই - - কারণ ঈশ্বর অবিনাশী । এ জ্ঞান কল্যাণকারী—কারণ ঈশ্বর কল্যাণময়। বেদ নিত্য, সনাতন –কারণ ঈশ্বর নিত্য ও সনাতন ।
কিন্তু কতিপয় নামধারী তথাকথিত অপপ্রচারকারী শাস্ত্র বিরুদ্ধ মত বাদ চাপিয়ে দিচ্ছে। যেটা আমাদের আরো ক্ষতি বয়ে আনছে। যেখানে বেদ বলছেঃ-
।। যথেমাং বাচং কল্যানীমাবদানি জনেভ্যঃ ।।
#গায়ত্রী মহামন্ত্র_পরিচিতি:
। সর্বপ্রথম গায়ত্রী মন্ত্রের সাক্ষাৎকার বা দর্শন করেছেন মহর্ষি বিশ্বামিত্র । এজন্য উনার নামে মন্ত্র গায়ত্রী মন্ত্রের পরিচিতি পেয়েছে। মহর্ষি বিশ্বামিত্র গায়ত্রী মন্ত্রে বিদ্যমান বিশ্বের কল্যাণকারী শক্তির রহস্যের উদঘাটন করেছেন।★গায়ত্রী মন্ত্রের ভিন্ন ভিন্ন নাম:
🔷গুরুমন্ত্র: যখন ব্রহ্মচারী বালক সর্বপ্রথম গুরুকুলে বিদ্যাধ্যয়নের জন্য গুরুর নিকট যায় তখন সবার আগে বেদারম্ভ সংস্কার-এ গায়ত্রী মন্ত্রের উপদেশ দেওয়া হয় । এ কারণে গায়ত্রী মন্ত্রকে গুরুমন্ত্র বলা হয় ।
🔷গায়ত্রী: গায়ত্রী ছন্দে রচিত হওয়ার কারণে একে গায়ত্রী
বলা হয় ।
স্তুত্যৰ্থক গৈ ধাতু থেকে অত্র প্রত্যয়। অতঃ ঋগ্বেদীয় প্রারম্ভিক মন্ত্র " অग्িनमीळ" থেকে পদার্থ-স্তবন থেকে শুরু হয়ে থাকে । অত: সেই ছন্দের নাম গায়ত্রী নামে পড়া হয় ।
🔷 " গায়ত্রী গায়তেঃ স্তুতিকর্মণঃ, ত্রিগমনা বা বিপরীতা, গায়তী মুখাদুদপতদিতি চ ব্রাহ্মণম্ " [-- নিরুক্ত, দৈবতকাণ্ড ৭/১২]
#অর্থ: " গায়তী " স্তুত্যৰ্থক গৈ ধাতু থেকে অত্র প্রত্যয় । অতঃ ঋগ্বেদীয় প্রারম্ভিক মন্ত্র " অग्িनमीळे " থেকে পদার্থ-স্তবন থেকে শুরু হয়ে থাকে । অত: সেই ছন্দের নাম গায়ত্রী নামে পড়া হয় ।★অথবা, যে ছন্দ (ত্রিগমন) তিন পাদযুক্ত হয়। অতঃ গম এবং " ত্রি " এর বিপর্যয়ে " গায়ত্রী " নিষ্পন্ন হয়ে থাকে। ত্রিগম-গমত্রি -- গায়ত্রী।
🔷মন্ত্ররাজ: সম্পূর্ণ ফলদায়ী মন্ত্রের মধ্যে গায়ত্রী মন্ত্রকে সর্বশ্রেষ্ঠ, শীঘ্র ফলদায়ক বা অবশ্য ফলদায়ক হিসেবে বলা হয়। এই মন্ত্র দ্বারা সিদ্ধ হওয়ার পর অন্য মন্ত্র দ্বারা সিদ্ধ করার আবশ্যকতা নেই, অতঃ গায়ত্রী মন্ত্রকে মন্ত্ররাজ বলা হয় ।
🔷কামধেনু: গায়ত্রী মন্ত্র দ্বারা সিদ্ধ হওয়ার পর যা চাওয়া হয় সেটা প্রাপ্ত হয় । অতঃ গায়ত্রী মন্ত্রের নাম কামধেনু ।
#মহর্ষি_স্বামী_দয়ানন্দ সরস্বতী_জী_বলেছেন,
'অনেন জপোপাসনাদিকমংণা ধর্মাথংকামমোক্ষণাং সদ্যঃ 11 সিদ্ধিৰ্ভবেন্নঃ "
🔷ধর্ম - যা সত্য ন্যায়ের আচরণ করতে, অর্থ- যা ধর্ম থেকে পদার্থ প্রাপ্তি করতে, কাম -- যা ধর্ম এবং অর্থ থেকে ইষ্ট-ভোগাদি সেবন করতে এবং মোক্ষ -- যা সমস্ত দুঃখ থেকে দূরে স আনন্দে অবস্থান করতে। এই চার পদার্থের সিদ্ধি আমাদের শীঘ্ৰ প্ৰাপ্ত হোক ।
🔷অতঃ এই মন্ত্রের নাম কামধেনু ।
#গুরুমন্ত্র: বেদারম্ভ সংস্কারে গুরু নিজের শিষ্যকে গায়ত্রী মন্ত্রের উপদেশ দেন। অতঃ গায়ত্রী মন্ত্রকে গুরুমন্ত্র পড়তে হয়।
#বেদমুখ: গায়ত্রী মন্ত্র বেদ-এ মুখ্য মন্ত্ৰ । অতঃ গায়ত্রী মন্ত্রকে বেদমুখ "-ও বলা হয় ।
#সাবিত্রী: এই মন্ত্রে সবিতার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করা হয়েছে এবং এই মন্ত্রের দেবতা সবিতা । অত: এই কারণে সাবিত্রী বলা হয় । মনুস্মৃতি ২/৮৩ নং শ্লোকে একে " সাবিশ্যাস্তু " বলা হয়েছে ।
বেদমাতা: উপনিষদকালে গায়ত্রী মন্ত্রের মাহাত্ম্যের প্রচারের আধ্যিকতার জন্য মনুষ্যগণ গায়ত্রী মন্ত্রকে " বেদ এর মাতা " বা " ছন্দের মাতা" বলতে শুরু করেছিলো। অথর্ববেদ ১৯/৭১/১ নং মন্ত্রেও একে "বেদমাতা " বলা হয়েছে
🔷বেদাদি শাস্ত্রে গায়ত্রী মন্ত্র :
ओ३म् भूर्भुवः॒ स्वः। तत्स॑वि॒तुर्वरे॑ण्यं॒ भर्गो दे॒वस्य॑ धीमहि।धियो॒ यो नः॑ प्रचो॒दया॑त्॥
🔷স্বর রহিত মন্ত্র:
भूर्भुवः स्वः । तत्सवितुर्वरेण्यम्भर्गो देवस्य धीमहि । धियो यो नः प्रचोदयत् ॥
পাঠ:
भः। भव। स्व। तत्। व। वय। । । । । यः। नः। प्रचोदयादिति प्रऽचोदयात्
🌸 ওম্ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি। ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ 🌸
♦ [ ঋগ্বেদ: ৩/৬২/১০ ; যর্জুবেদ: ৩/৩৫; ২২/৯;৩০/২; ৩৬/৩ ; সামবেদ উত্তরার্চিক ১৪৬২; তৈত্তিরীয় সংহিতা: ১/৫/৬/৪, ৪/১/১১/১ ; তৈত্তিরীয়াণ্যক: ১/১১/২, ১০/২৭/১; তৈত্তিরীয়াণ্যক ( আন্ধ্র) : ১০/৩৫ ; মৈত্রিয়নী সংহিতা: ৪/১০/৩; ঐতরেয় ব্রাহ্মণ ৪/৩২/২, ৫/৫/৬, ৫/১৩/৮, ৫/১৯/৮ ; কৌষীতকি ব্রাহ্মণ: ২৩/৩, ২৬/১০; গোপথ ব্রাহ্মণ: ১/১/৩৪; দৈবত ব্ৰাহ্মণ: ৩/২৫ ; শতপথ ব্রাহ্মণ: ২/৩/৪/৩৯, ১৩/৬/২/৯, ১৪/৯/৩/১১, তৈত্তরীয় আরণ্যক: ৪/১১/২, ১০/২৭/১; তৈত্তরীয় আরণ্যক ( আন্ধ্র): ১০/৩৫ ; বৃহদারণ্যক উপনিষদ: ৬/৩/১১ ; জৈমিনীয় উ. ব্রাহ্মণ: ৪/২৮/১ ; শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ: ৪/১৮ ; আশ্বালায়ন শ্রৌতসূত্র: ৭/৬/৬ ;৮/১/১৮; শাংখ্যায়ন শ্রৌতসূত্র: ২/১০/২, ২/১২/২, ১০/৬/১৭, ১০/৯/১৬ ; আপ. শ্রৌতসূত্র: ৬/১৮/১; শাংখ্যায়ন গৃহ্যসূত্র: ২/৫/১২, ২/৭/১৯, ৬/৪/৮ ; কৌশিক সূত্র: ৯১/৬ ; সামমন্ত্র ব্রাহ্মণ: ১/৬/২৯ ; বৌধায়ন ধর্মশাস্ত্র: ২/১০/১৭/১৪; খাদিরগৃহ্য সূত্র: ২/৪/২১; আপস্তম্ব গৃহ্যসূত্র: ৪/১০/৯-১২ ; আপস্তম্ব শ্রৌতসূত্র: ২০/২৪/৬ ; মানব শ্রৌতসূত্র: ৫২/৪/৪৩; ঋগ্বিধান ১/১২/৫]
#ভাষাৰ্থঃ
অথ গুরুমন্ত্রঃ—(ওম্ ভূর্ভুবঃ স্বঃ)। অ-কার, উ-কার এবং ম-কার যুক্ত হইলে, ‘ওম্’ এই অক্ষর সিদ্ধ হয়।যথাহ মনুঃ— “অকারং চাপ্যুকারং চ মকারং চ প্রজাপতিঃ। বেদত্রয়ান্নিরদুহদ্ ভূর্ভুবঃ স্বরিতীতি চ॥” [★মনু° অ° ২। শ্লোক ৭৬ ]
♦ তাই এটি পরমেশ্বরের সকল নামের মধ্যে সর্বোত্তম নাম, যাহাতে পরমেশ্বরের সব নামের অর্থই চলে আসে। এই এক "ওম্" নাম দ্বারা ঈশ্বরের সব নামের-ই বোধ হয়ে থাকে।★তৈত্তিরীয় উপনিষদ বচনম্। প্রপা° ৭। অনু° ৬] (ভুবরিত্যপানঃ) যিনি মুক্তি লাভের ইচ্ছুক দের, মুক্তি প্রাপ্তদের এবং স্বীয় সেবক ধর্মাত্মাদিগকে, সব দুঃখ থেকে পৃথক করে সর্বদা সুখে রাখেন, এইজন্যই পরমেশ্বরের নাম ‘ভুবঃ’ হয় । (স্বরিতি ব্যানঃ) যিনি সমগ্র জগতে সর্বব্যাপক হয়ে সবাইকে নিয়ম শৃঙ্খলায় আবদ্ধ করেন, আর সকলের একমাত্র আশ্রয় স্থল তথা সুখস্বরূপ, এজন্যে পরমেশ্বর কা নাম ‘স্বঃ’ হয়। এই I মহাব্যাহৃতি সমূহের সংক্ষিপ্ত অর্থ।
🔷 এখন #গায়ত্রী মন্ত্রের অর্থ লেখা হচ্ছেঃ-
(সবিতুঃ) যিনি সমগ্র জগতের উৎপাদক, যিনি ঐশ্বর্য্যের দাতা, (দেবস্য) যিনি সকলের আত্মাকে প্রকাশিত করেন[জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করেন], যিনি সব প্রকার সুখের দাতা, তাঁহার (বরেণ্যম্) যে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য, (ভর্গঃ) শুদ্ধ বিজ্ঞান স্বরূপ রয়েছে, (তৎ) সেই স্বরূপ কে (ধীমহি) আমরা সদা প্রেম ও ভক্তি পূর্বক ধ্যান করে নিজেদের আত্মা-তে ধারণ করি। [এর প্রয়োজনীয়তা কি?] (যঃ) যেন এই সবিতা দেব পরমেশ্বর, (নঃ) আমাদের (ধিয়ঃ) বুদ্ধিবৃত্তিকে (প্রচোদয়াৎ) কৃপা করে সব মন্দকর্ম থেকে পৃথক করে, সদা উত্তমকর্মে প্রবৃত্ত করেন।
♦ এজন্যে আমাদের সকলের উচিতঃ- সৎ, চিৎ, আনন্দস্বরূপ, নিত্যজ্ঞানী, নিত্যমুক্ত, অজন্মা, নিরাকার, সর্বশক্তিমান্, ন্যায়কারী, সর্বব্যাপক, দয়ালু, কৃপালু, সমগ্র জগতের জনক ও ধারণকারী পরমেশ্বরের-ই সদা উপাসনা করা। যেন ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মোক্ষ—নামক মনুষ্যদেহরূপ বৃক্ষের চার ফল রয়েছে, পরমেশ্বরের প্রতি আমাদের ভক্তি ও তাঁর কৃপা দ্বারা সর্বথা সব মনুষ্য সেগুলোকে প্রাপ্ত হয়। এই ছিল সংক্ষেপে গায়ত্রী মন্ত্রের অৰ্থ বিশ্লেষণ |—মহর্ষি স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জী " পঞ্চমহাযজ্ঞবিধি " গ্রন্থে গায়ত্রী মন্ত্র সমন্ধে লিখেছেন, " এবং চতুর্ষু বেদেষু সমানী মন্ত্রঃ
♦ গায়ত্রী বেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্ত্র। পরমাত্মার ধ্যানের জন্য গায়ত্রী সিদ্ধ বৈদিক মন্ত্ৰ। এই মন্ত্রের ঋষি বিশ্বমিত্র এবং দেবতা সবিতা। বিশ্বমিত্র নামক বিখ্যাত ঋষি সর্বপ্রথম এই মন্ত্রের মর্ম উপলব্ধি করিয়া প্রচার করেন। মন্ত্রের দেবতা বা বিষয় সবিতা অর্থাৎ জগৎস্রষ্টা ব্ৰহ্ম।
★🔷★ সমগ্র বেদের জ্ঞান সূক্ষ্ম ভাবে গায়ত্রী মন্ত্রে আছে বলেই ইহাকে বেদমাতা বলে।
♦ পবিত্র বেদে পরিস্কারভাবে বর্ণিত আছে যে, যে কেউই স্বাধীনভাবে মন্ত্রটি উচ্চারণ,জপ করতে পারেন এবং মানসিক ও আত্মিকভাবে লাভবান হতে পারেন। তাই আসুন,সকলে প্রতিদিন পবিত্র গায়ত্রী মহামন্ত্র জপ করি সঠিক জানি অন্যকেও জানাই শাস্ত্র অধ্যায়ন করি।♥
নমস্কার
ओ३म्
ও৩ম্ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ