#বৈদিক_সন্ধ্যোপাসনা
দুই বেলা সন্ধ্যা উপাসনার শাস্ত্রীয় প্রমাণঃ- শাস্ত্রে দিনে দুই বেলা উপাসনা ও বিশেষ করে গায়ত্রী মন্ত্র জপের মাহাত্ম্য ধ্বনিত হয়েছে, প্রথমত প্রাতঃকালে সূর্য উদয়ের পূর্বে, আর দ্বিতীয়ত দিনের শেষে সায়াহ্নে, দিন ও রাতের সন্ধিকালে। সূর্য উদয়ের পূর্বে ঘুম থেকে ওঠে গায়ত্রী মন্ত্র জপ সহ উপাসনা কর্ম করতে হবে এবং দিনের শেষে সূর্যাস্তের পরেও গায়ত্রী মন্ত্র জপ সহ উপাসনা করতে হবে। এই ব্যাপারে মনুস্মৃতির দ্বিতীয় অধ্যায়ে ১০১-১০২ নম্বর শ্লোকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে
পূর্বাং সন্ধ্যাং জপংস্তিষ্ঠেৎ সাবিত্রীমাকদর্শনাৎ।
পশ্চিমাং তু সমাসীনঃ সমাগৃক্ষবিভাবনাৎ৷৷১০১৷৷
অনুবাদঃ প্রাতঃসন্ধ্যাকালে সূর্যোদয় দর্শন পর্যন্ত সাবিত্রী (গায়ত্রী) জপ করতে করতে আসনে স্থিত হবে এবং সূর্যাস্তের পর যে পর্যন্ত নক্ষত্রমণ্ডলের দর্শন না হয়, ততক্ষণ আসনে সমাসীন হয়ে সায়ংসন্ধ্যার উপাসনা করবে।
পূর্বাং সন্ধ্যাং জপংস্তিষ্ঠস্লৈশমেনো ব্যপোহতি।
পশ্চিমাং তু সমাসীনো মলং হস্তি দিবাকৃতম্৷৷১০২৷৷
অনুবাদঃ প্রাতঃসন্ধ্যাকালে আসনে বসে গায়ত্রী জপ করলে রাত্রিকালীন মানসিক মলিনতা বা দোষসমূহ দূর হয় এবং আসনে সমাসীন হয়ে সায়ংসন্ধ্যাকালে গায়ত্রী জপ করলে দিনের বেলায় সঞ্চিত মানসিক মলিনতা বা দোষসমূহ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়।
অভিপ্রায় এই যে, প্রতিদিন দুই সময়ে সন্ধ্যোপাসনা করার মাধ্যমে পূর্ববেলায় সঞ্চিত দোষসমূহের উপর চিন্তন-মনন এবং পশ্চাত্তাপ করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে না করার জন্য সংকল্প করা হয় তথা গায়ত্রী জপের দ্বারা নিজের সংস্কারকে শুদ্ধ-পবিত্র করা সম্ভব। সন্ধ্যোপাসনা মোট দশটি ধাপে সম্পন্ন হয়। সেই ধাপগুলো হল– (১) আচমন, (২) ইন্দ্রিয় স্পর্শ, (৩) মার্জন, (৪) প্রাণায়াম, (৫) অঘমর্ষণ, (৬) মনসা পরিক্রমা, (৭) উপস্থান, (৮) গায়ত্রী পাঠ, (৯) সমর্পণ এবং (১০) নমস্কার।
সোর্সঃ-
বৈদিক সন্ধ্যোপাসনা বিধি।