🔸পবিত্র বেদ; আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের আচরণ ও কার্যবিধি কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে সকল মানবজাতির সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করছি বৈদিক জীবনাচরণ পদ্ধতির সারমর্ম পবিত্র বেদের কিছু মন্ত্র ও মন্ত্রাংশের ভাবানুবাদ। 🍂
🔸. একজন বৈদিকের প্রথম লক্ষ্য থাকা উচিত তার চারিত্রিক উন্নয়ন।
ওঁ বিশ্বানি দেব সবিতর দুরিতানি পরাসুব।
যদ্ভদ্রং তন্ন আ সুব।।
(যজুর্বেদ ৩০.৩)
ভাবানুবাদ- হে পরমেশ্বর,আমি যাতে আমার খারাপ গুণসমূহ বর্জন করতে পারি এবং সদগুণ সমূহকে আয়ত্ত্ব করে নিজ চরিত্রের উন্নতি ঘটাতে পারি।
🔸. মাহিরভূর্মা পৃদাকুর নমস্ত
আতানানর্বা প্রেহি
(যজুর্বেদ ৬.১২)
অর্থাৎ হে মনুষ্য,হিংস্র বা উগ্র হয়ো না। নমনীয় ও সত্যনিষ্ঠ জ্ঞানী হও।
🔸. ম ভ্রাতা ভ্রাতরম্ অরত্যহ অথ
(অথর্ববেদ ৩.৩০.৩)
অর্থাৎ ভাই-ভাই,ভাই-বোন এবং একজন আরেকজনের সাথে কখনো বিবাদ করোনা, কখনো অন্য কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করোনা।
🔸.মিত্রস্যাহং চক্ষুষা সর্বাণি ভূতানি সমীক্ষে
(যজুর্বেদ ৩৬.১৮)
অর্থাৎ সকল জীবকে মিত্রের চোখে দেখবে।
🔸.গরীব-দুঃখী ও বিপদগ্রস্তদের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করা বৈদিক ধর্মালম্বীর কর্তব্য।
শত হস্ত সমাহার,সহস্র হস্ত সং কীর
(অথর্ববেদ ৩.২৪.৫)
অনুবাদ-আয় করতে হাতটিকে শতটিতে বৃদ্ধি করো আর দান করতে তাকে সহস্রে রূপান্তরিত করো।
"সামর্থ্যবানদের উচিত গরীবদের দান করা।তাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া উচিত,মনে রাখা উচিত অর্থসম্পত্তি চিরস্থায়ী নয়।রথের চক্র যেমন উৰ্দ্ধাধোভাবে ঘূর্ণিত হয়, তদ্রূপ ধন কখন এক ব্যক্তির নিকট, কখন অপর ব্যক্তির নিকট গমণ করে, অর্থাৎ এক স্থানে চির কাল থাকে না!"
(ঋগ্বেদ ১০.১১৭.৫)
কেবলাঘো ভবতী কেবলাদী,যে দরিদ্রকে অভুক্ত রেখে নিজে ভোজন করে সে প্রকারান্তরে পাপ ই ভোজন করে।
(ঋগ্বেদ ১০.১১৭.৬)
🔸.পানিদূষণ,বায়ুদূষণ,মাটি দূষণ করবেন না-
মাপোমৌস্রাদ্ধিহিন্স্রী
(যজুর্বেদ ৬.২২)
অর্থাৎ পুকুর,নদী,খাল,বনাঞ্চল এসব দূষিত বা ধ্বংস করোনা।
"বায়ুতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকি,একে দূষিত
করোনা।"
(যজুর্বেদ ৬.২৩)
পৃথ্বীম মা হিন্সিম অর্থাত্ মাটির দূষন
করোনা।
(যজুর্বেদ ১৩.১৮)
🔸.তেন ত্যাক্তেন ভূঞ্জীথা মা গৃধ কস্য স্বিদ্ধনম
(যজুর্বেদ ৪০.১)
অর্থাৎ পরের ধনে কখনো লোভ করোনা,ত্যাগের আদর্শ বজায় রেখে ভোগ করো।
🔸.যেকোন ধরনের অশ্লীলতা বৈদিক ধরমালম্বীদের জন্য বর্জনীয়-
অধঃ পশ্যস্ব মোপরি সন্তরাং পাদকৌ হর।
মা তে কশপ্লকৌ দৃশন্ স্ত্রী হি ব্রহ্মা বভূবিথ।।
(ঋগ্বেদ, ৮/৩৩/১৯)
অর্থাৎ, হে পুরুষ ও নারী,তোমরা ভদ্র ও সংযত হও,দৃষ্টি অবনত রাখো,পোশাক-পরিচ্ছেদ ও আচরণে অশ্লীলতা ও অসভ্যতা বর্জন করো।
(ঋগ্বেদ ৮.৩৩.১৯)
🔸.অশ্লীল কথা না বলা,শোনা বা দেখা নিয়ে পবিত্র বেদ এর উপদেশ
ওঁ ভদ্রং কর্ণেভি শৃনুয়াম
দেবা ভদ্রংপশ্যেমাক্ষ ভির্যজত্রা।
স্থিরৈরঙ্গৈস্তস্টুবাঁ সস্তনুভির্ব্যশে ম
দেবহিতং যদায়ুঃ।।
(যজুর্বেদ ২৫/১১)
অর্থাৎ, হে ঈশ্বর,আমরা যেন তোমার যজন করি,কান দিয়ে শ্লীল ও মঙ্গলময় কথাবার্তা শুনি,চোখ দিয়ে শ্লীল ও মঙ্গলময় দৃশ্য দেখি।তোমার আরাধনাতে যে আয়ুস্কাল ও সুদৃড় দেহ প্রয়োজন তা যেন আমরা প্রাপ্ত হই।
🔸. দেবানাম ভদ্রা সুমতির্ঋজুযতাং.... দেবানাং সখ্যামুপ...
(ঋগ্বেদ ১.৮৯.২)
অর্থাৎ বিদ্বান ও সচ্চরিত্র লোকেদের সাথে বন্ধুত্ব করো,দুশ্চরিত্রদের অসৎদের বর্জন করো।
🔸.কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যকে গড়ে তোল-
অয়ং মে হস্তো ভগবানয়ং...
আমার এক হাতে কর্ম,অপর হাতে বিজয়
(ঋগ্বেদ ১০.৬০.১২)
🔸.তন্মে মনঃ শিবসংকল্পমস্তু
(যজুর্বেদ ৩৪.১)
অর্থাৎ সর্বভূতের কল্যাণের মহৎ চিন্তায় নিজের মনস্থির করো।
🔸.সত্যবাদ্যতি ত্বং সৃজন্তু
(অথর্ববেদ ৪.১৬.৬)
অর্থাৎ নিজেকে সত্যবাদী হিসেবে সৃজন করো।
🔸.একজন বৈদিক ধর্মালম্বী সর্বভূতে সমদর্শী হবে।তার জন্যে কেউ ছোট নয়,কেউ বড় নয়।সকলেই এক অমৃতের সন্তান,সকলেই ভাই ভাই।
অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস
এতে সং ভ্রাতারো তাবৃধুঃ সৌভগায়
যুবা পিতা স্বপা রুদ্র
এযাং সুদুঘা পুশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভঃ ॥
(ঋগবেদ ৫.৬০.৫)
বঙ্গানুবাদ : মানুষের মধ্যে কেহ বড় নয়, কেহ ছোট নয়।
ইহারা ভাই ভাই । সৌভাগ্য লাভের জন্য ইহারা প্রযত্ন করে । ইহাদের পিতা তরুণ শুভকর্ম ঈশ্বর এবং মাতা জননীরূপ প্রকৃতি। পুরুষার্থী সন্তানমাত্রই সৌভাগ্য প্রাপ্ত হন।
🔸.একজন বৈদিকের সপ্ত মর্যাদা-
সপ্ত মর্যাদা কবয়স্তস্তক্ষুস্তাসামেকামিদভ্যয়হুরো গাত্।।
(ঋগ্বেদ ১০.৫.৬)
"সপ্ত হল নিষেধসমূহ যা নির্দেশিত হয়েছে,জ্ঞানীগণ যাকে সবসময় এড়িয়ে চলেন,যেগুলো মানুষকে সর্বদাই বিপথগামী করে।"
কী সেই সপ্ত মহাপরাধসমূহ? মহর্ষি যাস্ক তাঁর নিরুক্ত সংহিতায় বর্ননা করেছেন,
"চুরি,অশ্লীলতা ও ব্যভিচার,হত্যা,ভ্রুণনিধন,অগ্নিসংযোগ,নেশা/ মদ্যপান,অসততা।"
🔸.বৈদিক ধর্ম মানবতার ধর্ম। এখানে কোন ধরনের অস্পৃশ্যতা প্রথার কোন সুযোগ নেই-
সমানী প্রপা সহ বোরন্নভাগঃ সমানে যোক্ত্রে সহ বো যুনজ্মি।
সমঞ্চোহগ্নিং সযপর্যতারা নাভিমিবাভিতঃ।।
(অথর্ববেদ ৩.৩০.৬)
অর্থাৎ,হে মনুষ্যগণ তোমাদের ভোজন ও আহার হোক একসাথে,একপাত্রে, তোমাদের সকলকে এক পবিত্র বন্ধনে যুক্ত করেছি,তোমরা সকলে এক হয়ে পরমাত্মার উপাসনা(যজ্ঞাদি,ধ্যান) করো ঠিক যেমন করে রথচক্রের চারদিকে অর থাকে!
🔸. সকল মানব একতাবদ্ধ হও,সকলে একসাথে পরস্পর মিত্র হও,সকলের মন,চিত্ত এক হোক,সকলে সুখী হোক।
(ঋগ্বেদ, মন্ডলঃ ১০, সুক্তঃ ১৯১,মন্ত্র ২,৩,৪)
সংগচ্ছধ্বং সংবদধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম্।
দেবাভাগং য়থাপূর্বে সং জানানা উপাসতে।।২।।
অর্থঃ- প্রেমপূর্বক চল সবাই, যেন মোরা জ্ঞানী হই।
পূর্ব্বজ বিদ্বানদের অনুসরণে, কর্তব্য পালনে ব্রতী হই।।
সমানো মন্ত্রঃ সমিতিঃ সমানী সমানং মনঃ সহ চিত্তমেষাম্।
সমানং মন্ত্রমভি মন্ত্রয়ে বঃ সমানেন বো হবিষা জুহোমি।।৩।।
অর্থঃ- হোক মতামত সমান সবার, চিত্ত-মন সব এক হোক। একই মন্ত্রে যুক্ত সকলে, ভোগ্য পেয়ে সবে তৃপ্ত হোক।।
সমানী ব আকুতিঃ সমানা হৃদয়ানি বঃ।
সমানমস্তু বো মনো য়থা বঃ সু সহাসতি।।৪।।
অর্থঃ- হোক সবার হৃদয় তথা সংকল্প অবিরোধী সদা। মন ভরে উঠুক পূর্ণপ্রেমে, বৃদ্ধি হোক সুখ সম্পদা।।
▪️বৈদিক জীবনবিধি মেনে চলুন, মানব জীবনকে মহৎ, সুন্দর, শান্তিময় একটি ধরণী গড়ে তুলুন।🌸
ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি
🔸. একজন বৈদিকের প্রথম লক্ষ্য থাকা উচিত তার চারিত্রিক উন্নয়ন।
ওঁ বিশ্বানি দেব সবিতর দুরিতানি পরাসুব।
যদ্ভদ্রং তন্ন আ সুব।।
(যজুর্বেদ ৩০.৩)
ভাবানুবাদ- হে পরমেশ্বর,আমি যাতে আমার খারাপ গুণসমূহ বর্জন করতে পারি এবং সদগুণ সমূহকে আয়ত্ত্ব করে নিজ চরিত্রের উন্নতি ঘটাতে পারি।
🔸. মাহিরভূর্মা পৃদাকুর নমস্ত
আতানানর্বা প্রেহি
(যজুর্বেদ ৬.১২)
অর্থাৎ হে মনুষ্য,হিংস্র বা উগ্র হয়ো না। নমনীয় ও সত্যনিষ্ঠ জ্ঞানী হও।
🔸. ম ভ্রাতা ভ্রাতরম্ অরত্যহ অথ
(অথর্ববেদ ৩.৩০.৩)
অর্থাৎ ভাই-ভাই,ভাই-বোন এবং একজন আরেকজনের সাথে কখনো বিবাদ করোনা, কখনো অন্য কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করোনা।
🔸.মিত্রস্যাহং চক্ষুষা সর্বাণি ভূতানি সমীক্ষে
(যজুর্বেদ ৩৬.১৮)
অর্থাৎ সকল জীবকে মিত্রের চোখে দেখবে।
🔸.গরীব-দুঃখী ও বিপদগ্রস্তদের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করা বৈদিক ধর্মালম্বীর কর্তব্য।
শত হস্ত সমাহার,সহস্র হস্ত সং কীর
(অথর্ববেদ ৩.২৪.৫)
অনুবাদ-আয় করতে হাতটিকে শতটিতে বৃদ্ধি করো আর দান করতে তাকে সহস্রে রূপান্তরিত করো।
"সামর্থ্যবানদের উচিত গরীবদের দান করা।তাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া উচিত,মনে রাখা উচিত অর্থসম্পত্তি চিরস্থায়ী নয়।রথের চক্র যেমন উৰ্দ্ধাধোভাবে ঘূর্ণিত হয়, তদ্রূপ ধন কখন এক ব্যক্তির নিকট, কখন অপর ব্যক্তির নিকট গমণ করে, অর্থাৎ এক স্থানে চির কাল থাকে না!"
(ঋগ্বেদ ১০.১১৭.৫)
কেবলাঘো ভবতী কেবলাদী,যে দরিদ্রকে অভুক্ত রেখে নিজে ভোজন করে সে প্রকারান্তরে পাপ ই ভোজন করে।
(ঋগ্বেদ ১০.১১৭.৬)
🔸.পানিদূষণ,বায়ুদূষণ,মাটি দূষণ করবেন না-
মাপোমৌস্রাদ্ধিহিন্স্রী
(যজুর্বেদ ৬.২২)
অর্থাৎ পুকুর,নদী,খাল,বনাঞ্চল এসব দূষিত বা ধ্বংস করোনা।
"বায়ুতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকি,একে দূষিত
করোনা।"
(যজুর্বেদ ৬.২৩)
পৃথ্বীম মা হিন্সিম অর্থাত্ মাটির দূষন
করোনা।
(যজুর্বেদ ১৩.১৮)
🔸.তেন ত্যাক্তেন ভূঞ্জীথা মা গৃধ কস্য স্বিদ্ধনম
(যজুর্বেদ ৪০.১)
অর্থাৎ পরের ধনে কখনো লোভ করোনা,ত্যাগের আদর্শ বজায় রেখে ভোগ করো।
🔸.যেকোন ধরনের অশ্লীলতা বৈদিক ধরমালম্বীদের জন্য বর্জনীয়-
অধঃ পশ্যস্ব মোপরি সন্তরাং পাদকৌ হর।
মা তে কশপ্লকৌ দৃশন্ স্ত্রী হি ব্রহ্মা বভূবিথ।।
(ঋগ্বেদ, ৮/৩৩/১৯)
অর্থাৎ, হে পুরুষ ও নারী,তোমরা ভদ্র ও সংযত হও,দৃষ্টি অবনত রাখো,পোশাক-পরিচ্ছেদ ও আচরণে অশ্লীলতা ও অসভ্যতা বর্জন করো।
(ঋগ্বেদ ৮.৩৩.১৯)
🔸.অশ্লীল কথা না বলা,শোনা বা দেখা নিয়ে পবিত্র বেদ এর উপদেশ
ওঁ ভদ্রং কর্ণেভি শৃনুয়াম
দেবা ভদ্রংপশ্যেমাক্ষ ভির্যজত্রা।
স্থিরৈরঙ্গৈস্তস্টুবাঁ সস্তনুভির্ব্যশে ম
দেবহিতং যদায়ুঃ।।
(যজুর্বেদ ২৫/১১)
অর্থাৎ, হে ঈশ্বর,আমরা যেন তোমার যজন করি,কান দিয়ে শ্লীল ও মঙ্গলময় কথাবার্তা শুনি,চোখ দিয়ে শ্লীল ও মঙ্গলময় দৃশ্য দেখি।তোমার আরাধনাতে যে আয়ুস্কাল ও সুদৃড় দেহ প্রয়োজন তা যেন আমরা প্রাপ্ত হই।
🔸. দেবানাম ভদ্রা সুমতির্ঋজুযতাং.... দেবানাং সখ্যামুপ...
(ঋগ্বেদ ১.৮৯.২)
অর্থাৎ বিদ্বান ও সচ্চরিত্র লোকেদের সাথে বন্ধুত্ব করো,দুশ্চরিত্রদের অসৎদের বর্জন করো।
🔸.কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যকে গড়ে তোল-
অয়ং মে হস্তো ভগবানয়ং...
আমার এক হাতে কর্ম,অপর হাতে বিজয়
(ঋগ্বেদ ১০.৬০.১২)
🔸.তন্মে মনঃ শিবসংকল্পমস্তু
(যজুর্বেদ ৩৪.১)
অর্থাৎ সর্বভূতের কল্যাণের মহৎ চিন্তায় নিজের মনস্থির করো।
🔸.সত্যবাদ্যতি ত্বং সৃজন্তু
(অথর্ববেদ ৪.১৬.৬)
অর্থাৎ নিজেকে সত্যবাদী হিসেবে সৃজন করো।
🔸.একজন বৈদিক ধর্মালম্বী সর্বভূতে সমদর্শী হবে।তার জন্যে কেউ ছোট নয়,কেউ বড় নয়।সকলেই এক অমৃতের সন্তান,সকলেই ভাই ভাই।
অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস
এতে সং ভ্রাতারো তাবৃধুঃ সৌভগায়
যুবা পিতা স্বপা রুদ্র
এযাং সুদুঘা পুশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভঃ ॥
(ঋগবেদ ৫.৬০.৫)
বঙ্গানুবাদ : মানুষের মধ্যে কেহ বড় নয়, কেহ ছোট নয়।
ইহারা ভাই ভাই । সৌভাগ্য লাভের জন্য ইহারা প্রযত্ন করে । ইহাদের পিতা তরুণ শুভকর্ম ঈশ্বর এবং মাতা জননীরূপ প্রকৃতি। পুরুষার্থী সন্তানমাত্রই সৌভাগ্য প্রাপ্ত হন।
🔸.একজন বৈদিকের সপ্ত মর্যাদা-
সপ্ত মর্যাদা কবয়স্তস্তক্ষুস্তাসামেকামিদভ্যয়হুরো গাত্।।
(ঋগ্বেদ ১০.৫.৬)
"সপ্ত হল নিষেধসমূহ যা নির্দেশিত হয়েছে,জ্ঞানীগণ যাকে সবসময় এড়িয়ে চলেন,যেগুলো মানুষকে সর্বদাই বিপথগামী করে।"
কী সেই সপ্ত মহাপরাধসমূহ? মহর্ষি যাস্ক তাঁর নিরুক্ত সংহিতায় বর্ননা করেছেন,
"চুরি,অশ্লীলতা ও ব্যভিচার,হত্যা,ভ্রুণনিধন,অগ্নিসংযোগ,নেশা/ মদ্যপান,অসততা।"
🔸.বৈদিক ধর্ম মানবতার ধর্ম। এখানে কোন ধরনের অস্পৃশ্যতা প্রথার কোন সুযোগ নেই-
সমানী প্রপা সহ বোরন্নভাগঃ সমানে যোক্ত্রে সহ বো যুনজ্মি।
সমঞ্চোহগ্নিং সযপর্যতারা নাভিমিবাভিতঃ।।
(অথর্ববেদ ৩.৩০.৬)
অর্থাৎ,হে মনুষ্যগণ তোমাদের ভোজন ও আহার হোক একসাথে,একপাত্রে, তোমাদের সকলকে এক পবিত্র বন্ধনে যুক্ত করেছি,তোমরা সকলে এক হয়ে পরমাত্মার উপাসনা(যজ্ঞাদি,ধ্যান) করো ঠিক যেমন করে রথচক্রের চারদিকে অর থাকে!
🔸. সকল মানব একতাবদ্ধ হও,সকলে একসাথে পরস্পর মিত্র হও,সকলের মন,চিত্ত এক হোক,সকলে সুখী হোক।
(ঋগ্বেদ, মন্ডলঃ ১০, সুক্তঃ ১৯১,মন্ত্র ২,৩,৪)
সংগচ্ছধ্বং সংবদধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম্।
দেবাভাগং য়থাপূর্বে সং জানানা উপাসতে।।২।।
অর্থঃ- প্রেমপূর্বক চল সবাই, যেন মোরা জ্ঞানী হই।
পূর্ব্বজ বিদ্বানদের অনুসরণে, কর্তব্য পালনে ব্রতী হই।।
সমানো মন্ত্রঃ সমিতিঃ সমানী সমানং মনঃ সহ চিত্তমেষাম্।
সমানং মন্ত্রমভি মন্ত্রয়ে বঃ সমানেন বো হবিষা জুহোমি।।৩।।
অর্থঃ- হোক মতামত সমান সবার, চিত্ত-মন সব এক হোক। একই মন্ত্রে যুক্ত সকলে, ভোগ্য পেয়ে সবে তৃপ্ত হোক।।
সমানী ব আকুতিঃ সমানা হৃদয়ানি বঃ।
সমানমস্তু বো মনো য়থা বঃ সু সহাসতি।।৪।।
অর্থঃ- হোক সবার হৃদয় তথা সংকল্প অবিরোধী সদা। মন ভরে উঠুক পূর্ণপ্রেমে, বৃদ্ধি হোক সুখ সম্পদা।।
▪️বৈদিক জীবনবিধি মেনে চলুন, মানব জীবনকে মহৎ, সুন্দর, শান্তিময় একটি ধরণী গড়ে তুলুন।🌸
ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি