শুভ দীপাবলি 🪔
নমস্কার
🪔---জ্ঞানী তুমি প্রদীপ জ্বালো----------🪔
🌼--------অন্ধকার করো দূর--------------🌼
📖----------অজ্ঞানতা দূর করো ---------📖
🎶------------বাজিয়াছে দীপাবলির সুর ----🎶
🌼✍️এ বিশ্ব জগৎে জ্ঞানই হলো সবথেকে পবিত্র। সে আলো স্বরুপ জ্ঞানকে আহ্বান করি আমরা। পবিত্র বেদ সে জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু। তবে কিছু উৎসব রয়েছে যেগুলো আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে জড়িয়ে আছে। দীপাবলি তেমনি একটি উৎসব। যার রয়েছে একটি সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ভিত্তি। আজ এই জ্ঞানের আলোর উৎসবে সকলকে স্বাগতম।
দীপাবলি🪔:
🪔দীপাবলী শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে "দীপ" ও "আবলী" এই দুইটি শব্দ পাওয়া যায়। "দীপ" শব্দের অর্থ "প্রদীপ" আর "আবলী" শব্দের অর্থ "পংক্তি"। দীপাবলীর শব্দবিশ্লেষণগত দিক থেকে এটির দ্বারা পংক্তির ন্যায় সারিবদ্ধ প্রদীপ্ত দীপের আলোক উৎসব নির্দেশ করে, যা এখন পর্যন্ত পালন করা হয়।
তবে দীপাবলির উল্লেখ কোনো শাস্ত্রীয় গ্রন্থে পাওয়া যায় না। তবে এর রয়েছে অসীম মাহাত্ম্য।
প্রাচীন কালে এই দিনটি পালিত হলো "শারদীয় নবশস্যেষ্টি" নামে৷ এই নামটি অনেকের কাছেই নতুন। তাই এই নামের অর্থ অনেকেই বুঝতে পারছেন না। "নবশস্যেষ্টি" শব্দটিকে ভাঙলে পাওয়া যায় — নব + শস্য + ইষ্টি। "নব" অর্থ "নতুন", "শস্য" অর্থ "ফসল" আর "ইষ্টি" অর্থ "যজ্ঞ"। মনুসংহিতায় (৪।২৬) নতুন ফসল ওঠার পর তা দিয়ে "নবশস্যেষ্টি" যজ্ঞ করার বিধান দেওয়া হয়েছ— "শস্যান্তে নবশস্যেষ্টয়া তথর্ত্বন্তে দ্বিজোঅধ্বরৈঃ"। এছাড়াও গোভিল, পারস্কর, আপস্তম্ব প্রভৃতি গৃহ্যসূত্রেও যব, মুগসহ নতুন শস্য দিয়ে এসময় যজ্ঞের বিধান পাওয়া যায়৷ আবার সনাতন ধর্মের শ্রৌত গ্রন্থসমূহে প্রতি অমাবস্যায় "দর্শেষ্টি" নামক যজ্ঞের বিধান আছে। এই শারদীয় অমাবস্যায় "দর্শেষ্টি" যজ্ঞের পাশাপাশি নতুন ফসল (শস্য) দিয়ে "নবশস্যেষ্টি" যজ্ঞ করারও বিধান থাকায় এই অমাবস্যা অন্যান্য অমাবস্যার তুলনায় এই আলাদা একটি গুরুত্ব লাভ করেছিল।
🍁আলোর উৎসব হওয়ার কারণসমূহ:
১. একই তিথিতে "নবশস্যেষ্টি" ও "দর্শেষ্টি" যজ্ঞ থাকায় প্রাচীন ভারতের প্রতি গৃহ যজ্ঞের শিখায় আলোকিত হয়ে উঠত।
২. নতুন ফসল ঘরে ওঠায় সকলের মাঝে একটি উৎসবের আমেজ কাজ করত৷
৩. বছরের অন্যান্য অমাবস্যার তুলনায় এই অমাবস্যা অপেক্ষাকৃত বেশি গাঢ় অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ায় সেই অন্ধকারকেও দূর করার জন্য আলোর ব্যবহার।
৪. শরৎ শেষে হেমন্তকে বরণ।
ফলে সব কিছু মিলিয়ে প্রাচীন কাল থেকেই এই রাত্রিতে আলোক শিখা প্রত্যেক বাড়িতে প্রদীপ্ত হয়ে উঠত৷
📑ঐতিহাসিক কারণ:
মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এই দিনে দুষ্টের দমন করে প্রিয় পত্নী মাতা সীতাকে নিয়ে রাম রাজ্য অযোধ্যায় ফিরে আসেন। তাকে বরণ করার আনন্দে পুরো নগরী আলোয় সজ্জিত হয়ে উঠে।
🌼✍️প্রাচীন সময়ের মতো এখন আর যজ্ঞ আয়োজিত হয় না। শুধু প্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করা হয় দীপাবলি। তবে শুধু প্রদীপ জ্বালিয়ে আমাদের দায়িত্ব শেষ নয়। আমাদের এই আলোর মর্ম উপলব্ধি করতে হবে। আলোক রুপ জ্ঞান দ্বারা অন্ধকারকে বিদূরিত করে সাম্যবাদী আদর্শ গড়ে তুলতে হবে। কুসংস্কারকে করতে হবে দূর। তাই এ হোক আমাদের প্রার্থনা,
"অসতো মা সদ্ গময়
তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যোর্মা অমৃতম্ গময়।"
=[] বৃহদারণ্যক উপনিষদ্: ১/৩/২৮ []=📖🌿
"অসত্য থেকে আমাকে সত্যে নিয়ে যাও,
অন্ধকার থেকে আমাকে জ্যোতিতে নিয়ে যাও, মৃত্যু থেকে আমাকে অমৃতে নিয়ে যাও।"
সকলকে দীপাবলির শুভেচ্ছা।
জগতের সর্বত্র শান্তি বিরাজিত হোক।
প্রচারেঃ VEDA
🌼---------ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ-------------🌼
মন্তব্যসমূহ