সনাতন সন্ন্যাসী ও কৃতিত্ব: ০২


স্বামী শ্রদ্ধানন্দ সরস্বতী

সনাতন সন্ন্যাসী ও কৃতিত্ব: ০২

আর্য সমাজের মহান্ নেতা, কার্যকর্ত্তা, শিক্ষাবিদ্ তথা সমর্পণশীল পুরুষ স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ফাল্গুন কৃষ্ণা ১৩সংবৎ ১৯১৩বি. (১৮৫৭সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি) জালন্ধর জেলার তালওয়ান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতার নাম নানকচন্দ, যিনি পুলিশ কর্মচারী ছিলেন তথা তৎকালীন পশ্চিমোত্তর প্রদেশে কার্যরত ছিলেন। স্বামীজীর পূর্ব নাম ছিল মুন্শীরাম। তিনি বরেলীতে স্বামী দয়ানন্দজীর ব্যাখ্যান শ্রবণ করার সুযোগ প্রাপ্ত হন। লাহৌরে পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় তিনি আর্য সমাজের সংস্পর্শে আসেন এবং লাহৌর আর্য সমাজের সদস্য হন।  পরবর্তীতে আর্য প্রতিনিধি সভা পাঞ্জাবের প্রধানও হন এবং তিনি জলন্ধরকে কেন্দ্র করে ধর্ম প্রচার করতে থাকেন।

গুরুকুল কাঙ্গড়ী প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা ছিল মহাত্মা মুন্শীরামের একটি মহত্ত্বপূর্ণ কার্য। কালান্তরে তিনি আর্য সমাজের পাশাপাশি দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কাজ করার সংকল্প করেছিলেন।  দলিতোদ্ধার, শুদ্ধি ও সংগঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক আন্দোলন সংগঠিত করার পাশাপাশি তিনি দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯১৯সালে অমৃতসরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেস অধিবেশনে তিনি স্বাগত বক্তার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।  তিনি ১৯১৩ সালে হিন্দি সাহিত্য সম্মেলনের ভাগলপুর অধিবেশনের সভাপতিত্বের দায়িত্বও গ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৬ সালের ২৩ ডিসেম্বরে দিল্লির নয়া বাজারের একটি ভবনে অসুস্থ অবস্থায় অবস্থানকালে  একজন মুসলিম আততায়ী স্বামীজীকে হত্যা করেন। 

স্বামী শ্রদ্ধানন্দজী একজন সফল লেখক ও সাহিত্যিক ছিলেন।  তিনি উর্দু, হিন্দি ও ইংরেজি তিনটি ভাষায়ই চমৎকার সাহিত্য রচনা করেছেন।

লে. কা.–
১.আত্মকথা তথা জীবনচরিত–১. 
২.কল্যাণ- মার্গ কা পথিক (আত্ম কথা) (১৯৮১ বি.), 
৩.বন্দীঘর কে বিচিত্র অনুভব (১৯৭৯ বি. ১৯২৩) 
৪.আর্যপথিক লেখরাম কা জীবন বৃত্তান্ত (১৯১৪), 
৫.তত্ববেত্তা ঋষি কী কথা (দয়ানন্দ গ্রন্থমালা ভাগ-১, ১৯২৫ সালে প্রকাশিত ঋষি দয়ানন্দজীর সংক্ষিপ্ত জীবনী ।

ঋষি দয়ানন্দ বিষয়ক শোধাত্মক গ্রন্থ–
৬.উপদেশ মঞ্জরী (পূনা প্রবচনের উর্দু অনুবাদ ১৮৯৮), 
৭.ঋগ্বেদাদি ভাষ্য ভূমিকার উর্দু অনুবাদ (তৃতীয়াংশ মাত্র) (১৮৯৮), 
৮.ঋষি- দয়ানন্দ কা পত্র ব্যবহার ভাগ ১ (সম্পাদন, ১৯৬৬ বি.), (১৯১০), 
৯.আদিম সত্যার্থ প্রকাশ ঔর আর্যসমাজ কে সিদ্ধান্ত (১৯৭৪ বি.) (১৯১৭), 
১০.প. লেখরাম রচিত মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী কে উর্দু জীবনচরিত কী ভূমিকা (১৮৯৭)

আর্য ধর্ম গ্রন্থমালার অন্তর্গত প্রকাশিত গ্রন্থ– 
(১৯১৬-১৭)
আর্যোং কী নিত্যকর্ম বিধি, পাঁচ মহায়জ্ঞোং কী বিধি, 
বিস্তারপূর্বক সন্ধ্যা বিধি (লালা জ্বালাসহায় প্রণীত উর্দু পুস্তকের অনুবাদ), আচার অনাচার ঔর ছূত- ছাত,
ঈসাঈ পক্ষপাত ঔর আর্যসমাজ (পাদরী জে. এন. ফর্কহর দ্বারা লিখিত 'মাঈন রিলিজিয়স মূবমেণ্ট্স ইন ইণ্ডিয়া' তে আর্যসমাজ বিষয়ক টিপ্পণীর সমীক্ষা), 
বেদ ঔর আর্যসমাজ (১৯৭৩ বি.), 
মাতৃভাষা কা উদ্ধার (হিন্দী সাহিত্য সম্মেলন ভাগলপুর অধিবেশনে (১৯১৩) দেওয়া অধ্যক্ষীয় ভাষণের মুদ্রিত সংস্করণ), (১৯৭০ বি.), 
পারসিমত ঔর বৈদিক ধর্ম (মার্টিন হোঙ্গ প্রণীত পুস্তক আধারিত) (১৯১৬) 
মানব ধর্মশাস্ত্র ঔর শাসন পদ্ধতি (১৯১৭)।

আধ্যাত্মিক এবং ধার্মিক উপদেশপূর্ণ সাহিত্য–
ধর্মোপদেশ তিন খণ্ড (লালা লব্ভূরাম নৈয়ড় দ্বারা সম্পাদিত এবং গুরুকুল কাঙ্গড়ী স্বাধ্যায় মঞ্জরীর অন্তর্গত প্রকাশিত, (১৯৩৭),
মুক্তি সোপান (১৯২৫), 
বেদানুকূল সংক্ষিপ্ত মনুস্মৃতি (১৯১১)।

অন্যান্য গ্রন্থ –
আর্য সঙ্গীত মালা (১৯০০), 
উত্তরাখণ্ড কী মহিমা (১৯১৯), 
জাতি কে দীনোং কো মত ত্যাগো (১৯১৯), 
হিন্দুও, সাবধান, তুম্হারে ধর্ম দুর্গ পর রাত্রি মেং ছিপকর ধাবা বোলা গয়া । (খ্বাজা হসন নিজামীর পুস্তক দাইয়ে ইসলাম এর উর্দুতে দেওয়া উত্তর 'মুহম্মদী সাজিশ কা ইন্কশাফ' এর হিন্দী অনুবাদ (১৯২৪), 
বর্তমান মুখ্য সমস্যা-অছূতপন কে - কলঙ্ক কো দূর করো (১৯২৪), 
মেরী গঢবাল যাত্রা (১৯১৯), 
রামায়ণরহস্যকথা ( ১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি শিবরাত্রিতে টঙ্কারায় দেওয়া রামায়ণ বিষয়ক প্রবচন), 
হিন্দু সংগঠন কিউ ঔর কৈসে ? (১৯২৪) ।

উর্দু গ্রন্থ–
বর্ণ ব্যবস্থা (১৮৯১), 
এক মাংস প্রচারক মহাপুরুষ কী গুপ্ত লীলা কা প্রকাশ (লালা মুল্করাজ ভল্লা লিখিত মাংস ভক্ষণের সমর্থনে লিখিত পুস্তকের খণ্ডন), ( ১৮৯৫), 
ক্ষাত্র ধর্ম পালন কা গৈরমামূলী তরীকা (১৮৯৫), 
যজ্ঞ কা পহলা অঙ্গ (স্বস্তি বাচন এবং শান্তিকরণের উর্দু অনুবাদ) (১৮৯৭), 
আর্যসমাজ কে খানাজাদ দুশমন (লেখ সঙ্গ্রহ) ( ১৮৯৯), সুবহে উমীদ (বেদের বিভিন্ন ভাষ্যকার এবং স্বামী দয়ানন্দকৃত ভাষ্য শৈলীর তুলনাত্মক বিবেচন) (১৮৯৮),
পুরাণোং কী নাপাক তালীম সে বাচো, (১৮৯৯), 
সদ্ধর্ম প্রচারক পর পহলা লায়বল কেস । প. গোপীনাথ দ্বারা লালা মুন্শীরাম তথা অন্য দুইজন বজীরচন্দ বিদ্যার্থী তথা বস্তীরামের উপর মানহানি কেসের সম্পূর্ণ বিবরণ (উর্দু তথা হিন্দী উভয় ভাষায় ছাপানো হয়েছে), 
মহাত্মা মুন্শীরাম কে সাত লেক্চরোং কা মজমূবা (সংগ্রহ) (১৯০৪), 
দুঃখী দিল কী পুরদর্দ দাস্তাং (১৯০৬), 
মেরী জিন্দগী কে নশেবোফরাজ (আত্মকথার অংশ), (১১৯১),
হিন্দু মুসলিম ইত্তিহাদ কী কহানী (১৯২৪), 
অন্ধা এতকাদ ঔর খুফিয়া জিহাদ (The History of the Assasians এর অনুবাদ (১৯২৬), 
মুহম্মদী সাজিশ কা ইন্কশাফ (খাজা হসন নিজামীর পুস্তক দাইএ ইস্লামের খণ্ডন) (১৯২৪), 
অছুতোদ্ধার কা ফৌরী মসলা, 
মেরা আখরী মশবিরা দাইএ ইস্লাম যা তবাহিএ ইস্লাম, 
নিয়োগ কে মূজিদ । 
উর্দু গ্রন্থ সংগ্রহ- কুলিয়াত সন্ন্যাসী- ১৯২৭এ শান্ত স্বামী অনুভবানন্দ দ্বারা সম্পাদিত ।

ইংরেজি গ্রন্থ–
1. The Future of the Arya Samaj: A fore- cast-২৭ 
2. The Arya Samaj and Its Detrec- tors: A Vindication.  3. Hindu Sangthan: Saviour of the Dying Race-1924. 4. Inside Congress: 'The Librator' 

স্বামী শ্রদ্ধানন্দ দ্বারা প্রকাশিত ঔর সম্পাদিত পত্র–
সাপ্তাহিক সদ্ধর্মপ্রচারক ১৮৮৯ মেং উর্দু ভাষায়, পুনঃ ১৯০৭সালে হিন্দীতে, শ্রদ্ধা সাপ্তাহিক (১৯২০), সত্যবাদী সাপ্তাহিক (১৯০৪), দি লিবরেটর - এপ্রিল ১৯২৬  হইতে অক্টোবর ১৯২৬ পর্যন্ত।

✨Run with #veda

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

🔸সনাতন ধর্ম ও নারী 💐

সনাতন ধর্মে কি গোমূত্র পানের উল্লেখ রয়েছে ⁉️

▪️একাদশী" কি শাস্ত্র সম্মত ❓