"ইতিহাসগ্রন্থ হতে ধর্মশিক্ষা" - ০৩
"ইতিহাসগ্রন্থ হতে ধর্মশিক্ষা - যথোপযুক্ত ব্যবহার"
ব্যবহার আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় অপরের নিকট যে আমরা কতটুকু সুশিক্ষিত ও উত্তম ব্যক্তি। কদর্য ব্যবহার কিংবা শঠতা, প্রতারণা, সুযোগসন্ধানী অভিব্যক্তি সম্পন্ন মনুষ্যকে সকলেই ঘৃণা করে এবং এড়িয়ে চলার প্রয়াস করে থাকে। কারণ, সে ব্যক্তির ব্যবহার যথোপযুক্ত নয়। যে সর্বদা অপরের ক্ষতি ও নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে বদ্ধপরিকর, সে এই জগতের জন্য কল্যাণপ্রদায়ী হতে পারে নাহ।
কিন্তু একজন ধার্মিক, সদাচরণকারী কিংবা সুশিক্ষিত ব্যক্তির এরুপ ব্যক্তির অনৈতিক ব্যবহারের বিপরীতে কিরূপ আচরণ করা আবশ্যক। কেউ যদি সকলের প্রতি প্রতারণা করে, স্বার্থান্বেষী ভাবনায় ডুবে থাকে এবং কদর্য ব্যবহার করে কিংবা শঠতাকে ধারণ করে করে তবে তার প্রতি সদাচরণ করা মূর্খামি ছাড়া কিছুই নয়। কারণ, সে এই সদাচরণ এর মূল্যায়ন এর পরিবর্তে নিজের সে কদর্য রূপের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। উদাহরণস্বরূপ, মহাভারতে শকুনি যেন ছলনার আশ্রয় নিয়ে পঞ্চ পান্ডবদের পরাজিত করতে চেয়েছিলো, তার বিপরীতে অর্জুন কর্তৃক ধনুর্বিদ্যা দ্বারা সূর্য অস্তমিত হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দুরাচারী সিন্ধুরাজ জয়দ্রথকে হত্যা করে।
বর্তমান সময়েও আমরা এরুপ বিপরীত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। যেখানে ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তির প্রতি কি আচরণ করা আবশ্যক তা আমাদের অজানা। সেজন্য মহাভারতে বনপর্বে বলা হয়েছে,
"যস্মিন্ যথা বর্ততে যো মনুষ্যস্তস্মিংস্তথা বর্তিতব্যং স ধর্মঃ।
মায়াচারো মায়য়া বাধিতব্যঃ সাধ্বাচারঃ সাধুনা প্রত্যুপেয়ঃ।।"
- মহাভারত, শান্তিপর্ব ১০৯/৩০
অর্থাৎ, যে যেরূপ ব্যবহার করে তাহার সহিত সেইরূপ ব্যবহার করাই ধর্মনীতি। যে কপট তাহার সহিত কপট ব্যবহার করিয়াই কপটতাকে দমন করিবে, আর সদ্ব্যবহার করিয়াই সাধুলোককে আপ্যায়ন করিবে।
সেজন্য কপটতার সহিত সদাচরণ করা ছিদ্রযুক্ত পাত্রে জল রাখার মতোই। কিন্তু যে উত্তম ব্যবহার করে, তার প্রতি সদাচরণ করাই ধর্মের শিক্ষা।
"ইতিহাসগ্রন্থ হতে ধর্মশিক্ষা" - ০৩
🔎 Run with #veda #krishna
মন্তব্যসমূহ