"পরমাত্মার আশ্রয়ই - মহালয়"
"পরমাত্মার আশ্রয়ই - মহালয়"
পরমাত্মাই মোদের একমাত্র আশ্রয়। সেজন্য, তার আশ্রয় আমাদের জন্য মহান আলয় তথা আশ্রয়। বর্তমান সময়ের সনাতনীদের নিকট বহুল প্রচলিত "মহালয়া" শব্দের ব্যবহার ও প্রয়োগ অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও সৌন্দর্যবহ। মহালয়া এর শাব্দিক অর্থ এই যে, মহান আলয় তথা আশ্রয়ের অধিকারিণী যিনি। যিনি এই জগতের সকলের পরম আশ্রয় ও অন্ধকাররুপী দুর্গতি নাশ করেন। সনাতনী পরম্পরার অন্যতম একটি রীতি পূর্বপুরুষদের মুক্তি বা সদগতির উদ্দেশ্য প্রার্থনা করা। বৎসরের নির্দিষ্ট মাস তথা ভাদ্র মাসের প্রথম ১৫ দিন কৃষ্ণপক্ষ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সে কৃষ্ণপক্ষের শেষ তিথি সকলের নিকট মহালয়া হিসেবে পরিচিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই পক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়ে থাকে।
কিন্তু পিতৃপক্ষ হওয়া সত্ত্বেও মহালয় না হয়ে মহালয়া সম্বোধন করার কারণ অত্যন্ত চমকপ্রদ এবং সনাতন ধর্মের নারীবাদী চিন্তার সর্বোৎকৃষ্ট বহিঃপ্রকাশ। সনাতন ধর্মশাস্ত্রে পরমাত্মাকে শুধুমাত্র কোনো পুরুষবাচক হিসেবে সম্বোধিত করা হয় নাহ। বরং, বেদ, উপনিষদসহ বৈদিক শাস্ত্রের বহু স্থানে পরমাত্মাকে নারীরুপে সম্বোধন করা হয়েছে। পরমাত্মাকে এমন সার্বজনীন রুপে সম্বোধন করার দৃষ্টান্ত একমাত্র সনাতন ধর্মে বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, ঋগ্বেদ বলা হয়েছে,
"ত্বং হি নঃ পিতা বসো ত্বং মাতা"
- ঋ০ ৮/৯৮/১১
অর্থাৎ, পরমাত্মাই আমাদের নিত্য মাতা পিতা ও বন্ধু।
এই জগতের অধীশ্বরকে এমন মিত্রতার সম্পর্কে আবদ্ধ করা, ভালোবাসার সম্পর্কে চিন্তা করা, মাতৃরূপে সম্বোধিত করার মাধ্যমে সনাতন এর মহানতা যেন সুপ্রশস্ত হয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।
এই অন্ধকার দূর করে মাতৃরূপে আলোক শিখা হয়ে আসা মহালয়া আমাদের মধ্যে থাকা অন্ধকার রুপে অজ্ঞানতা বিনাশ করে, আলোকবর্তিকা স্বরুপ জ্ঞানের দিকে অগ্রসর করি। এই মহান আশ্রয় দাতা স্বরুপ পরমাত্মাকে স্মরণ করি সর্বদা। কারণ, তিনি আমাদের পরম-আশ্রয়, তার আশ্রয় আমাদের মহালয়া।
🔎Run with #veda #mahalaya
মন্তব্যসমূহ