"চাণক্যনীতি - বিদুরনীতি - শুক্রনীতি"
প্রাচীন ভারতের নীতিশাস্ত্র যথেষ্ট সমৃদ্ধ ও কৌশলগত দিক থেকে উত্তম ছিল। রাষ্ট,সমাজ, শাসক, যুদ্ধ, কুটনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রতিফলন মেলে এই নীতি শাস্ত্র সমূহে। উদাহরণস্বরূপ, চাণক্য নীতি সমূহ একজন শাসকের, রাষ্ট্র পরিচালনাসহ বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যা বর্তমান সময়ে এসেও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক এবং বিশারদের নিকট আলোচ্য বিষয়। কিন্তু আমরা এই নীতিশাস্ত্র সমূহ খুব একটা চর্চা বা অধ্যয়ন করি নাহ। আমরা সানজু এর লেখা দি আর্ট অফ ওয়ার কিংবা নিকোলা ম্যাকিয়াভেলির দ্য প্রিন্স সম্পর্কে আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান কিংবা ডিপ্লোম্যাসির অনুরাগীদের পরিচিত হলেও এই প্রাচীন ভারতের নীতিশাস্ত্র সম্পর্কে ধারণা নগণ্য। কিন্তু এই সকল শাস্ত্রে রয়েছে অসাধারণ রাষ্ট্র, কুটনীতি, রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে গভীর জ্ঞান। উদাহরণস্বরূপ, কৌটিল্যের চাণক্য নীতিতে বিখ্যাত একটি নীতিকথা রয়েছে, "ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, নচেৎ ইহাদের পুনরুত্থান ঘটতে পারে" যা বর্তমান সময়ে রাষ্ট্রনায়কদের খুবই জনপ্রিয়। নিজ দেশের কোনো শত্রুদের শেষ রাখতে প্রস্তুত নয়। কারণ, ইতিহাস জানান দেয় শত্রুর শেষ রাখলে সে ক্ষমাকে দূর্বলতা মনে করে আবার আঘাত করবেই। উদাহরণস্বরূপ, বীর যোদ্ধা পৃথ্বীরাজ চৌহান ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে তরাইনের যুদ্ধে মুইজউদ্দিন মহম্মদ ঘোরিকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন কিন্তু পলায়নরত ঘোরিকে অনুসরণ না করে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু সেই পরাজিত ঘুরিদ সাম্রাজ্যের সুলতান মুইজউদ্দিন মহম্মদ ঘোরিকে ঠিক এক বছর পরে ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় রাজপুতদের উপর আক্রমণ করেন এবং পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করে পরবর্তীতে হত্যা করেন। এই পরাজয়ের ফলে ভারতের বুকে নেমে আসে ঘোর অমানিশা। যা সেই প্রাচীন চাণক্যের ধ্বনিকে প্রমাণিত করেছিল। সেজন্য, আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও কুটনৈতিক অধ্যয়নে ভারতবর্ষের নীতিশাস্ত্র সমূহ জানার প্রয়াস করুন। যা আপনার জ্ঞানের বিকাশ ঘটাবে বহু গুণ।