পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অযোধ্যা নগরী পর্ব :-২

ছবি
রামায়ণ ⚡ ▪️অযোধ্যা নগরী পর্ব :-২  সামন্তরাজসঙ্ঘৈশ্চ বলিকর্মভিরাবৃতাম্ ( রাজস্বদানে কর্মরত সামন্তরাজাগণে পরিবৃত ছিল এই অযোধ্যা নগরী) নানাদেশনিবাসৈশ্চ বনিগভিরুপশোভিতাম্ (বিভিন্ন দেশের বনিকগণ দ্বারা সমাবৃত) - (বাল্মীকি রামায়ণ, আদিকান্ড, সর্গ ৫ শ্লোক ১৪) পর্বতসদৃশ প্রাসাদসমূহ সুশোভিত রত্ন দ্বারা সুশোভিত ছিল। (প্রাসাদৈরত্নবিকৃতৈঃ পর্বতৈরিব শোভিতাম্ - ৫.১৫) চিত্রামষ্টাপদাকারাং বরনারীগণাযুতাম্। সর্বরত্নসমাকীর্ণাং বিমানগৃহশোভিতাম্।। (বাল্মীকি রামায়ণ, আদিকান্ড, সর্গ ৫ শ্লোক ১৬) - বিচিত্র শোভাসম্পন্ন, শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারীগণদ্বারা সমাবৃত, সর্বপ্রকার রত্নে পরিপূর্ণ, স্বর্ণবর্ণবিশিষ্ট সপ্ততল প্রাসাদসমূহে সুশোভিত। সমভূমিতে অবস্থিত পরস্পর গাঢ় সন্নিবিষ্ট অট্টালিকাদ্বারা সমাবৃত (গৃহগাঢ়ামবিচ্ছিদ্রাং সমভূমৌ নিবেশিতাম্) শালিতণ্ডুলসম্পূর্ণাম (শালি ধানের চাউলে সমৃদ্ধ) ইক্ষুকাণ্ডরসোদকাম্ (ইক্ষুরসের ন্যায় সুমিষ্ট পানীয় জলে পূর্ণ ছিল এই অযোধ্যা নগরী -৫.১৭) দুন্দুভীভির্মৃদঙ্গৈশ্চ বীণাভিঃ পণবৈস্তথাঃ। নাদিতাং ভৃশমত্যর্থং পৃথিব্যাং তামনুত্তমাম্। (বাল্মীকি রামায়ণ, আদিকান্ড, সর্গ ৫ শ্লোক ১৮) ...

অযোধ্যা নগরী পর্ব :-১

ছবি
রামায়ণ ⚡ ▪️অযোধ্যা নগরী পর্ব :-১ কোশলো নাম মুদিতঃ স্ফীতো জনপদো মহান্। নিবিষ্টঃ সরযূতীরে প্রভূতধনধান্যবান্।। অযোধ্যা নাম নগরী তত্রাসীল্লোকবিশ্রুতা। মনুনা মানবেন্দ্রেণ যা পুরী নির্মিতা স্বয়ম্।। (বাল্মিকী রামায়ণ, আদিকান্ড, সর্গ ৫, শ্লোক ৫-৬) - সরযূ নদীর তীরে সমৃদ্ধ, আনন্দদায়ক ও প্রভূত ধনধান্যে পূর্ণ কোশল নামক এক বিশাল রাজ্য অবস্থিত ছিল। সে রাজ্যে অযোধ্যা নামে সর্বজন প্রসিদ্ধ এক নগরী ছিল, যে নগরী শ্রেষ্ঠ মানব মনু স্বয়ং নির্মাণ করেছিলেন।  আয়তা দশ চ দ্বে চ যোজনানি মহাপুরী। শ্রীমতি ত্রীণি বিস্তীর্ণা সুবিভক্তমহাপথা।। রাজমার্গেণ মহতা সুবিভক্তেন শোভিতা। মুক্তপুষ্পাবকীর্ণেন জলসিক্তেন নিত্যশঃ।। (বাল্মিকী রামায়ণ, আদিকান্ড, সর্গ ৫, শ্লোক ৭-৮) - সেই ঐশ্বর্যশালিনী মহানগরী দৈর্ঘ্যে ১২ যোজন এবং প্রস্থে তিন যোজন; কিছু পরিকল্পিত বিশাল রাজপথ যুক্ত হওয়ায় অন্য নগরী থেকে তার পার্থক্য বোঝা যায়। বৃক্ষচ্যুত ইতস্তত বিকীর্ণ পুষ্পে সুদৃশ্য, প্রত্যহ জলসিঞ্চনে সিক্ত, সুষ্ঠ বিভক্ত রাজপথ দ্বারা সেই অযোধ্যা নগরী ছিল সুশোভিত।  সেই অযোধ্যা নগরী ছিলো প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং ঐ প্রাচীরের ...

"ধর্মনিরপেক্ষতা নাকি পরমতসহিষ্ণুতা"

ছবি
"ধর্মনিরপেক্ষতা নাকি পরমতসহিষ্ণুতা" নমস্কার সকল অমৃতের সন্তানগণ! কদাপি স্বামী বিবেকানন্দ ধর্মের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন,  "ধর্ম এমন একটি ভাব, যা পশুকে মনুষ্যত্বে ও মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে"  অর্থাৎ, স্বামীজী ধর্মকে সার্বজনীন অর্থে এক উত্তম স্থানে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। যা প্রতিটি মনুষ্য, প্রাণী, তথা সৃষ্টির এক ঐশ্বরিক আদর্শকে প্রতিফলিত করে। বর্তমান সময়ের যে ধর্মের ব্যাখ্যা, সেরূপ ব্যাখ্যা সনাতন ধর্মশাস্ত্রে ধর্মের যে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে তদরুপ নয়। বরং, বর্তমান সময়ের ধর্ম বলতে মনুষ্য মাত্র তাহার বিশ্বাস অর্থে প্রয়োগ করা হয়।  কিন্তু  মহর্ষি কণাদ প্রণীত বৈশেষিক দর্শনে ধর্মের পরিভাষা করা হয়েছে যে-  "যতোহভ্যুদয়নিঃশ্রেয়সসিদ্ধিঃ স ধর্মঃ"।।  (বৈশেষিক দর্শন– ১/১/২) সূত্রার্থঃ- (যতঃ) যা দ্বারা (অভ্যুদয়) এই সংসারের [বিশ্বের] উন্নতি এবং (নিঃশ্রেয়স) মোক্ষ (সিদ্ধিঃ) সিদ্ধি হয় (স ধর্মঃ) তাকে ধর্ম বলা হয়।  অর্থাৎ যা দ্বারা বিশ্বের উন্নতির সহির শান্তি এবং উত্তম আনন্দ প্রাপ্তি হয় তাহাই ধর্ম। কেহ যদি মনুষ্য শরীর প্রাপ্ত হয়েও পশুত্ব ধারণপূর্বক হিংসা, বিদ্বেষ আদি...

আমাদের জন্মগ্রহণে এত বৈচিত্র্যতা ও ভেদাভেদ কেন 🤔 ⁉️

ছবি
আমাদের জন্মগ্রহণে এত বৈচিত্র্যতা ও ভেদাভেদ কেন 🤔 ⁉️ ✨ জন্মান্তরবাদ অনুসারে প্রতিটি মনুষ্য কর্মফলের বন্ধন থেকে মোক্ষ অর্জন ব্যতীত বারংবার জন্মমৃত্যুর ঘূর্ণাবর্তে আবদ্ধ থাকবে। আমাদের বর্তমান জন্মগ্রহণ নিশ্চিত রুপে পূর্ব জন্মের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ হয়েছে। যদি পুণর্জন্ম ধারণাকে অস্বীকার করা হয়, তবে একটি সংশয় উদীয়মান হয়ে উঠে যে, তাহলে আমাদের জীবাত্মার দেহলাভের এত ভেদাভেদ ও বৈচিত্র্যতা কেন? কেন কেউ জন্মলাভ করে পশু দেহে, কেউ বা জন্মগ্রহণ করে অতি বিদ্বান কিংবা ধার্মিক পরিবারে? ঈশ্বর যদি সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক ও নিরপেক্ষ হয়ে থাকেন তবে তিনি কেন এমন বৈষম্য করবেন? এরুপ সংশয় নিবারণে যোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবদগীতায় এই রহস্য ভেদ করে বলেছেন,  "যদা সত্ত্বে প্রবৃদ্ধে তু প্রলয়ং যাতি দেহভৃৎ। তদোত্তমবিদাং লোকানমলান্ প্রতিপদ্যতে ।  রজসি প্রলয়ং গত্বা কর্মসঙ্গিযু জায়তে। তথা প্ৰলীনস্তমসি মূঢ়যোনিষু জায়তে৷।" - গীতা ১৪/১৪-১৫ অর্থাৎ, প্রাণধারী জীব নিশ্চিতভাবে সত্ত্বগুণের বৃদ্ধিতে যখন মৃত্যু প্রাপ্ত হয় তখন উত্তম সাধকের ন্যায় নির্মল জন্ম প্রাপ্ত হয়। রজোগুণের বৃদ্ধিতে মৃত্যু প্রাপ্ত হলে কর্...

"প্রেমের অনন্য কীর্তি রামসেতু"

ছবি
"প্রেম খ্যাতি জগৎ জুড়ে,  লাগেনা কোনো হেতু পত্নীকে রক্ষায় হলো অসাধ্য সাধন, নির্মিত হলো রামসেতু" 🖋️ নমস্কার সকল অমৃতের সন্তানগণ! সনাতনধর্ম একমাত্র ঐশ্বরিক ধর্ম এবং তার ইতিহাস পৃথিবীর সর্বত্র খুঁজে পাওয়া যায়। যা তার প্রাচীনত্বকে প্রমাণ করে। কিন্তু তারপরও কিছু মানুষ এর ইতিহাসকে কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দেয়। তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাপূ্র্বক তেমনি এক ইতিহাসের প্রামাণিক সত্যতা উপস্থাপন করার প্রচেষ্টা করব।  🌿রামায়ণ:  🌿✍️রামায়ণ ভারত তথা সনাতনধর্ম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম এর জীবনী। যার আদর্শ আজকেও মানুষকে সঠিক মার্গ প্রদান করে। শ্রীরাম চন্দ্রের রাজ্য এতটাই শান্তি ও সৌহার্দ্যের প্রতীক ছিল যে মহাত্মা গান্ধী ভারতকে রাম রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান। রামায়ণ এর অন্যতম এক অংশ হলো "রাম সেতু" যাকে "সেতু বন্ধনম" নামে উল্লেখ রয়েছে বাল্মিকী রামায়ণে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় তথাকথিত বুদ্ধিজীবী মহল এ মহান নিদর্শনকে প্রাকৃতিক এবং মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামকে কাল্পনিক আখ্যায়িত করার প্রয়াস করে থাকে। তাই বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ দ্বারা চেষ্টা করব সংশয় ন...

নারীর কি পৌরহিত্যের অধিকার রয়েছে ⁉️

ছবি
"নারী ও পৌরহিত্যেের অধিকার" নারী সনাতন ধর্ম শাস্ত্রে সর্বোচ্চ মর্যাদা আসনে আসীন। নারীর অবস্থান শুধু গৃহে আবদ্ধ থাকা নয়, বরং নিজ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাবলে সে হতে পারে জগৎ জৌতি। সেই সর্ববিজয়াদের উদ্দেশ্য বেদ বলছে,  "পুরুষেভ্যো গোভ্যো অশ্বেভ্যঃ শিবা"  -অথর্ববেদ--৩/২৮/৩  অর্থাৎ, তারা সর্বভূতের কল্যণদায়িনী, সর্ববিজয়া। সনাতন ধর্ম কখনো নারী পুরুষের বৈষম্য কিংবা বিভেদকে আশ্রয় না দিয়ে সর্বদা সাম্য ও সম-অধিকারের উপদেশ দিয়েছে। যেমন অজ্ঞানতাবশত অন্ধেরা এরুপ প্রলাপ করতো যে  নারীদের বেদ পাঠের অধিকার নেই, কিন্তু পরমাত্মা প্রদত্ত অমৃত জ্ঞান অর্জন করে আমরা জানতে পারি,  "ও৩ম্ যথেমাং বাচং কল্যানীমাবদানিজনেভ্যঃ। ব্রহ্ম রাজান্যাভ্যাং শূদ্রায়চার্যায় চ স্বায় চারণায়।  প্রিয়ো দেবানংদক্ষিণায়ৈ দাতুরিহ ভুয়াসময়ং মে কামংসমৃধ্যতামুপ মাদো নমতু।।" -যজুর্বেদ ২৬/২  অর্থাৎ,  হে মনুষ্যগণ! আমি যেরূপে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র, স্ত্রী-পুরুষ এবং অন্যান্য সমস্ত জনগনকে এইকল্যানদায়িনী পবিত্র বেদবানী বলিতেছি, তোমরাও সেই রূপ কর। যেমন বেদবানীর উপদেশ করিয়া আমি বিদ্বানদের প্রিয় হয়েছ...